Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

শাহজালাল বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে পানির ভয়াবহ সংকট

ময়লা জমে অকেজো হচ্ছে বিমানের মূল্যবান যন্ত্রাংশ

Icon

মুজিব মাসুদ

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ময়লা জমে অকেজো হচ্ছে বিমানের মূল্যবান যন্ত্রাংশ

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে পানি নেই। ভয়াবহ এ সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিমান ধোয়ামোছার স্বাভাবিক কার্যক্রম।

পানির অভাবে উড়োজাহাজ পরিষ্কার করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এতে দেখা দিয়েছে বিমানের মূল্যবান যন্ত্রাংশের ক্ষতির শঙ্কা।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বিমানের একেকটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজের দাম ১২শ কোটি টাকার বেশি। এসব উড়োজাহাজের ইঞ্জিনগুলো প্রতিনিয়ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়।

এজন্য প্রচুর পরিমাণ পানি প্রয়োজন হয়। কিন্তু বিমান ধোয়ামোছা দূরের কথা, পানির অভাবে হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শৌচাগার ব্যবহারসহ স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে।

পানির অভাবে দেশির পাশাপাশি বিদেশি উড়োজাহাজ পরিষ্কার করতে না পারায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মনে করছে বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।

তাদের বক্তব্য, বিদেশি উড়োজাহাজগুলো এসব কাজের জন্য বিমানকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব দিচ্ছে। কিন্তু বিমান কর্তৃপক্ষ তাদের কোনো সেবা দিতে পারছে না।

বিমানের জনসংযোগ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) তাহেরা খন্দকার যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সে পানি সংকট চলছে।

বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এ কারণে বিমানের পরিষ্কার-পরিছন্নতা থেকে শুরু করে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

সমস্যা সমাধানে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিয়েছে বিমান। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের প্রধান প্রকৌশলী (ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোডাকশন) এআরএম কায়সার জামাল স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, প্রকৌশল পরিদপ্তরে এয়ারক্রাফট মেনটেইন্যান্সের বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত ওয়াশ কাট, সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশন সিস্টেম, ড্রাই ক্লিনিং মেশিন, বয়লার, উড়োজাহাজের ব্রেক ওয়াশ প্রভৃতি বিভিন্ন টেকনিক্যাল কাজে পানি ব্যবহৃত হয়।

পানির অভাবে এসব কাজ ব্যাহত হচ্ছে এবং মেশিনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানি সংকটে অনেক সময় বিমানবহরের উড়োজাহাজগুলো যথাযথভাবে পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। এ পরিছন্নতার সঙ্গে বহির্বিশ্বে বিমান তথা দেশের ভাবমূর্তির বিষয়টিও সম্পর্কযুক্ত।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, পানি সংকটের বিষয়ে আগে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রকৌশল পরিদপ্তরের জন্য একটি বিকল্প পানির লাইনের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এরপরও পানি প্রবাহের কোনো উন্নতি হয়নি।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বিমান প্রকৌশল পরিদপ্তরের হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্স একটি বৃহৎ এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এখানে বিমানবহরের উড়োজাহাজের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়। উড়োজাহাজের মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও অপারেশনাল কাজের প্রয়োজনে প্রকৌশল পরিদপ্তরে ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন শিফটে প্রায় ১ হাজার ২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করেন।

এ বিপুল জনবলের জন্য প্রতিদিন প্রচুর পানি প্রয়োজন হয়। আর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিমান প্রকৌশল হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্স এলাকার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।

বর্তমানে দিনের অধিকাংশ সময় পানি সরবরাহ লাইনে প্রবাহ এতটাই কম থাকে যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

এছাড়া টয়লেট, মসজিদ, বেসিনসহ দৈনন্দিন ব্যবহার্য কাজে পানির তীব্র সংকট থাকায় হ্যাঙ্গারের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।

তীব্র পানি সংকটের কারণে হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্স এলাকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারছে না। এ অবস্থায় চিঠিতে প্রকৌশল পরিদপ্তরের পানি সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম