মন কেমনের ফাল্গুনী দিন...
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
হাবীবাহ্ নাসরীন
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![মন কেমনের ফাল্গুনী দিন...](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/04/222-67a1aea94e278.jpg)
দীর্ঘ শীতের শেষে আড়মোড়া ভাঙতে শুরু করেছে প্রকৃতি; ফাল্গুন এসে দাঁড়িয়েছে দরজায়! বসন্তের এই তো শুরু। শীতের আরামদায়ক উষ্ণ কম্বলখানা এবার তুলে রাখতে হবে। ছুটতে হবে জীবনের আয়োজনে। নিশ্চয়ই সেই আয়োজনে শামিল হতে চলেছেন আপনিও। মানুষ তো প্রকৃতিরই অংশ। সব সুন্দরের সম্মিলন ঘটে যেন এ বসন্তেই। শীতকালের মতো বিকাল হতেই টুপ করে সন্ধ্যা নেমে যায় না, বরং নতুনপাতার গন্ধভরা বাতাস নিয়ে বিকাল দীর্ঘ হতে শুরু করে। সেই বাতাসে মনটা হঠাৎ হুহু করে ওঠে; কার জন্য, কীসের জন্য, কে জানে!
আমাদের প্রতিটি ঋতুরই রয়েছে নিজস্ব সৌন্দর্য আর সুবাস। প্রতিটি ঋতুর জন্যই অপেক্ষা করে থাকি বছরের বাকি সময়। তবে বসন্তবরণের আনন্দ যেন একটু বেশি রঙিন হয়ে ধরা দেয়। এ যে রঙেরই ঋতু! চারপাশের যেদিকে তাকাই, কেবল রঙে রঙিন। কত রং আর কত নামের যে ফুল ফোটে। এমনকি ইট-পাথরের এ ধূসর শহরেও যেন প্রাণ জেগে ওঠে। ধুলা-জ্যাম মাড়িয়ে পথ চলতে গিয়ে হঠাৎ নাকে এসে লাগে আমের মুকুলের পাগল করা তীব্র ঘ্রাণ। মন যেন ছুটে চলে যায় ফেলে আসা সুদূর শৈশবে। একছুটে দিগন্ত পার হতে চায় সময়ের পাগলা ঘোড়া!
বসন্ত আমাদের উৎসবের ঋতু। বসন্তবরণে সবার আয়োজন সমান না হলেও ভালোলাগার ঘাটতি থাকে না একটুও। শীতের বাড়তি পোশাক ছাড়াই বাইরে বের হওয়া যায়। ফুলে ফুলে সাজিয়ে নেওয়া যায় নিজেকে। তাইতো এ ঋতু নারীর কাছে একটু বেশি প্রিয়। বসন্তবরণের আয়োজনে হলুদ, লাল, সবুজ রঙের পোশাকের প্রাধান্য ছিল অনেকটা সময়জুড়ে। আর বসন্তের পোশাক বলতে বোঝা হতো শাড়িকেই। তবে সেই ধারায় এসেছে পরিবর্তন। এখন কেবল দু-তিনটি রং নয়, বরং সব রঙেই বরণ করা হচ্ছে বসন্তকে। যে কোনো রঙের, যে কোনো ধরনের পোশাকে আপনি সেজে উঠতে পারেন এ দিনে। শাড়ির সঙ্গে বাঙালি নারীর সম্পর্ক আজীবনের। তাই বলে শাড়িতে স্বচ্ছন্দ না হলেও সেটি পরতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, ফতুয়া, স্কার্ট, গাউন, যেটি আপনাকে আরাম আর স্বচ্ছন্দ দেবে, সেটিই বেছে নিন।
বসন্তবরণের উৎসবে সাজতে গিয়ে নিজের প্রতি একটু খেয়াল রাখবেন। মনে রাখবেন, এখন কিন্তু আর শীত নেই। তাই খুব বেশি সাজতে যাবেন না। শীতে যতটা মন ভরে সেজেছেন, এবার তার থেকে খানিকটা কম সাজতে হবে। অর্থাৎ মেকআপের ক্ষেত্রে আরেকটু মিতব্যয়ী হতে হবে। কেন, বলুন তো? কারণ তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। মুখের ওপর আলাদা একটা আস্তরণ যত বেশি পুরু হবে, তত বেশি ঘেমে গলে যাওয়ার ভয় থাকবে। তাই ন্যূনতম সাজে কীভাবে সর্বোচ্চ দেখতে সুন্দর লাগে, সেই উপায় জেনে নিতে হবে। মনে রাখবেন, সহজই সুন্দর। আপনি যত বেশি ন্যাচারাল থাকবেন, তত বেশি সুন্দর থাকবেন। নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলে হালকা সাজেই হয়ে উঠতে পারবেন অনন্যা।
চারদিকে যখন ফুলে ফুলে ছেঁয়ে আছে, তখন গয়না হিসাবে আর কী বেছে নেবেন ফুল ছাড়া! অন্য কোনো গয়না এ দিনে মানানসই হবেও না। বসন্তের দিনটিতে মন ভরে ফুলের গয়না বেছে নিন। চুলে, গলায়, কানে, হাতে, মাথায় এমনকি টিকলি হিসাবেও ফুলের গয়না এ দিন মানিয়ে যাবে নিঃসংকোচে। হলুদ, সাদা, নীল, মেরুন রঙের চন্দ্রমল্লিকা, ক্যালানডুলায় সেজে উঠতে পারেন। লাল-হলুদ রঙের চায়নিজ চেরিও কিংবা রজনিগন্ধা, জারবেরা তো রয়েছেই। গোলাপ, গাঁদা, অর্কিড-কী নেই! খুব বেশি কিছু নয়, কেবল ফুলের একটি মুকুটই পারে আপনাকে সৌন্দর্যের রানি করে তুলতে। বিশ্বাস না হলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়েই দেখুন না!