টক জাতীয় একটি দেশীয় মৌসুমি ফল জলপাই। শীতের আগেই বাজারে আসতে শুরু করেছে জলপাই। ২ থেকে ৩ মাস পর্যন্ত এ ফলটি বাজারে পাওয়া যায়। কাঁচা-পাকা যে কোনো অবস্থাতেই জলপাই সুস্বাদু। জলপাইয়ে রয়েছে নানাগুণ। জলপাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে; ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে। জলপাইয়ে থাকা ফাইবার এবং মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয় এবং ডায়াবেটিসের জটিলতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় জলপাই। শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে। জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি থাকে। জলপাই হাড়ের ক্ষয়রোধ করতে কিংবা ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে বেশ কার্যকরী। ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। জলপাইয়ের তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে, চুল পড়া কমায় এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
এ পুষ্টি উপাদানগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং আমাদের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। যাদের বদহজম কিংবা মুখের অরুচি আছে, তারা তাদের খাবার তালিকায় যুক্ত করে নিতে পারেন জলপাই। শুধু জলপাই ফল হিসাবে নয়, এর তেল থেকে শুরু করে পাতায়ও রয়েছে নানা ঔষধি গুণ।
পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা কমায় : পিত্তথলিতে পাথর হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। এটি পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি সৃষ্টি করতে পারে। জলপাই পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিতে পারে। এটি পিত্তরসের স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং পিত্তথলিতে পাথর জমার সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। অন্যদিকে জলপাই থেকে যে তেল পাওয়া যায়, তা খুব-ই উপকারী মানব শরীরের জন্য। তাই গুণেভরা এ ফলটি লিকুইড গোল্ড কিংবা তরল সোনা নামেও বেশ পরিচিত।
আদিকাল থেকে পেটের চর্বি দূর করতে কিংবা সর্দি-কাশিতে জলপাইয়ের তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন জলপাইয়ের তেল। এ তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে যাদের ত্বকে অ্যালার্জি রয়েছে তারা গোসলের পানিতে এক চা চামচ তেল মিশিয়ে গোসল করে নিতে পারেন। জলপাই দিয়ে নানা স্বাদীয় আচার তৈরি করে তা সংরক্ষণ করে পরিবেশন করতে পারেন সহজেই।