রাজধানীতে বাস সংকটে সীমাহীন ভোগান্তি
দুই কারণে বাস সংকট-ডিএমপি * চালকদের একটি অংশ চুক্তিতে বাস চালাতে চায়-মালিক সমিতি

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বেতনভুক্ত নয়, চুক্তিতে বাস চালাতে চায় পরিবহণ চালক ও তাদের সহকারীদের একটি অংশ। এজন্য তারা সড়কে বাস নামাচ্ছেন না। অন্যদিকে তিনটি রুটে বাসের রঙ কমলা করার বাধ্যবাধকতা করায় কিছু বাস গ্যারেজে রয়েছে-এই দুই কারণে কয়েকদিন ধরে রাজধানীতে বাসের সংকট চলছে। এতে নগরবাসীর সীমাহীন কষ্ট হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, বুধবারও সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বাস কম ছিল। মালিবাগ রেলগেট, রামপুরা, বাড্ডা, বিমানবন্দর, শেওড়া ও বনানী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুপুর পর্যন্ত কয়েকশ যাত্রীকে যানবাহনের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে।
পরিবহণ খাতসংশ্লিষ্টরা জানায়, কাউন্টারভিত্তিক বাস চালাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে কয়েকটি পরিবহণ কোম্পানির বাসের চালক ও সহকারীরা। এর মূল কারণ হলো আগে তারা চুক্তিতে মালিকের কাছ থেকে বাস নিয়ে চালাতো। সেখানে তাদের আয় বেশি হতো। কাউন্টার ও টিকিট সিস্টেম হওয়ায় তাদের আয় কমে গেছে। এটা তারা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। একইভাবে রঙ করার জন্য কয়েকটি কোম্পানির বেশ কিছু বাস গ্যারেজে দেওয়া হয়েছে। রঙ করা শেষ হলে সেসব বাস তারা সড়কে নামাবেন। এটা শেষ হতে সবমিলিয়ে তাদের ১০ থেকে ১২ দিন লাগতে পারে। ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সংশ্লিষ্টরা জানায়, তুরাগ, অনাবিল ও এয়ারপোর্ট পরিবহণের চালকরা কাউন্টারভিত্তিক বাস চালাতে চাচ্ছেন না। সে কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছে। তাদেরকে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, দুয়েক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি ‘ঠিক হয়ে যাবে’।ঢাকার রামপুরার বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, রাইদা, অনাবিল এবং তুরাগের কোনো বাস সড়কে নেই। ফলে কয়েকশ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। তিনি আরও বলেন, বাড্ডা-রামপুরা হয়ে যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া বা ওইদিকে যেতে রাস্তায় হাজারও মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, কয়েকটি পরিবহণের চালকরা কাউন্টারে বাস চালাতে চাচ্ছেন না। এতে কয়েকটি সড়কে বাস কম চলছে। শুরুতে আপত্তি জানালেও ইকবাল, বলাকা পরিবহণের বাস চলাচল শুরু করেছে। তিনি বলেন, চুক্তিতে গাড়ি চালিয়ে বেশি লাভ করত এমন ড্রাইভাররা এই বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। তাদের ‘বোঝানোর’ চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার (ট্রাফিক) সুফিয়ান আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, দুই কারণে ঢাকায় বাসের সংখ্যা কমেছে। প্রথমত বাসের চালক ও সহকারীদের একটি অংশ আগের চুক্তিতে গাড়ি চালাতে চায়। দ্বিতীয়ত কমলা রঙ করতে অনেক বাস গ্যারেজে রয়েছে। আশা করছি, অল্প সময়ে এর সমাধান মিলবে।