বাস করেন রাজা মানসিংহের বংশধর
গফরগাঁওয়ে এক গ্রামের বাসিন্দা মাত্র ৪ জন
পাগলা থানা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার একটি গ্রাম ‘শরিফগঞ্জ’। পাগলা থানার স্বল্পপুনিয়া মৌজায় ৬ একর জমিতে গড়ে উঠেছে এই গ্রাম। এর বাসিন্দা সাকুল্যে ৪ জন। তারা হলেন স্কুল শিক্ষক রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক, স্ত্রী মাহফুজা বেগম মেরী ও তাদের ২ সন্তান। তবে সন্তানরা ঢাকায় থাকেন।
বাড়িতে বসবাসকারীরা মূলত মোগল সেনাপতি রাজা মানসিংহের বংশধর। মানসিংহের বংশধর যোজার সিং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এখানে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন। রানা মল্লিক যোজার সিংয়ের চতুর্থ বংশধর। রানা আমীর আলীর (ডাবল এমএ) ছেলে। রানা দীর্ঘদিন টাংগাব হাজী ইসমাঈল দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে অবসর নিয়ে কান্দিপাড়া আলিমুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পার্টটাইম শিক্ষকতা করছেন। শরীফগঞ্জের পূর্ব দিকে আছে স্বল্পপুনিয়া, উত্তরে নয়াবাড়ী, দক্ষিণে ময়ড়া ও পশ্চিমে সতরবাড়ী গ্রাম। এই গ্রামে রয়েছে ৬টি পুকুর। রয়েছে শতবর্ষী ২৫-৩০ রকমের আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আপেল, কমলা, স্ট্রবেরি, আঙুরসহ ফলজ ও ঔষধি প্রজাতির গাছ। বাড়িতে রয়েছে আমীর আলী নামে ইসলামিক পাঠাগার।
পাশের গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, শরীফগঞ্জ গ্রাম একটি বাড়ি নিয়ে গড়ে উঠেছে। পাশের গ্রামের কলেজ ছাত্র মোহাম্মদ আরমান বলেন, শরীফগঞ্জের পরিবেশ খুব সুন্দর। বাসিন্দারা সবাই উচ্চ শিক্ষিত। বাড়িতে বসবাসকারী রানা বলেন, খান সাহেব আলী ময়মনসিংহ পৌরসভার প্রথম মুসলিম ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি তার বাবার নামের সঙ্গে মিল রেখে শরীফগঞ্জ নামকরণ করেন। তিনি আমার দাদা হন। ১৯২২ সালে রাজা পঞ্চাদশ তাকে রৌপ্য পদক প্রদান করে খান সাহেব উপাধি দেন। সৌদি আরবের প্রথম কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ আমার ভাতিজা হন। ত্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আমার ভাগিনা হয়। মাহমুদউল্লাহ বিয়াদ খান সাহেব আলীর তৃতীয় মেয়ের নাতি। আমাদের বংশে বর্তমানে ৮ জন মাস্টার্স ডিগ্রিধারী ও ৫ জন ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে অনার্সসহ মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণি পেয়ে পাশ করেছি। আমার বড় ছেলে ইউনাইটেড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্সে গোল্ড মেডেল পেয়েছে। দ্বিতীয় ছেলে ডুয়েট থেকে আর্কিটেকচার পড়াশোনা করছে। গফরগাঁও আদর্শ বিদ্যানিকেতনের প্রিন্সিপাল এইচ কবীর টিটু বলেন, শত বছর পূর্বে উপজেলার টাংগাব ইউনিয়নে ঈশা খাঁ ও মানসিংহের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। যুদ্ধে ঈশা খাঁ জয়লাভ করেন। মানসিংহের কিছু লোক এখানে থেকে যান।