Logo
Logo
×

অল্পকথা

গ্রামের কুটিরশিল্প রক্ষা করুন

Icon

জাফর ইসলাম

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য শিল্পের ব্যাপক সম্প্রসারণ প্রয়োজন। আর এ শিল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কুটিরশিল্প। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার মানুষ এই শিল্পে জড়িত ছিল, কারণ এ শিল্পে ভারী যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় না। ঘরোয়া পরিবেশে এর উপকরণ সংগ্রহ করা যায়। এই উপকরণগুলো দিয়ে শিল্পী বা কারিগররা সুন্দর সুন্দর শিল্পকর্ম তৈরি করেন। বাংলাদেশ গ্রামপ্রধান দেশ হওয়ায় এখানকার অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বসবাস করে। আর যারা গ্রামে বসবাস করে, তাদের অধিকাংশই কৃষিকাজ করে। এসব কৃষকের অনেকে আবার কৃষিকাজের পাশাপাশি নানা রকম শৌখিন জিনিস তৈরি করে, যা তাদের বাড়তি আয়ের একটা মাধ্যমে পরিণত হয়।

কুটিরশিল্পে সাধারণত মৃৎশিল্প, বাঁশ-বেতের ঝুড়ি ইত্যাদি তৈরি করা হয়। এর পাশাপাশি অনেকে ঘরোয়া পরিবেশে তাঁত দিয়ে কাপড় তৈরি করে। দুঃখের বিষয় হলো, বর্তমানে এ শিল্পগুলো গ্রাম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আগের মতো এখন আর গ্রামের মানুষ এসব শিল্পে কাজ করে না। তারা কৃষিকাজের পাশাপাশি বিকল্প হিসাবে নানারকম কলকারখানায় কাজ করে। অনেকে বাড়িঘর নির্মাণের কাজও করে। ফলে এসব কুটিরশিল্প কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন এই বাংলার মসলিন কাপড় ইউরোপ ও আরব বিশ্বে সমধিক পরিচিত ছিল। ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের ফলে মসলিন কাপড়ের জায়গা দখল করে নেয় তাদের তৈরি করা রং-বেরঙের চিকন মিহি কাপড়। ফলে মসলিন কাপড়ের শিল্প হারিয়ে যায়।

আগের দিনে মানুষ নিজের বাড়িতেই তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী তৈরি করত। কিন্তু এখন সেসব কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। বাঁশ ও বেতের জায়গা দখল করে নিচ্ছে প্লাস্টিক সামগ্রী। ফলে এ শিল্পগুলো গ্রামবাংলায় তেমন আর চোখে পড়ে না।

এখনো আমরা কুটিরশিল্পের মাধ্যমে ঘরোয়া পরিবেশে পণ্য উৎপাদন করে ব্যবহার করতে পারি। এতে দেশ আমদানিনির্ভর অর্থনীতি থেকে মুক্তিলাভ করতে পারে। বিসিকের হিসাব অনুযায়ী, দেশে কুটিরশিল্প থেকে বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য উৎপন্ন হয়। মূল্য সংযোজন হয় প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের জিডিপিতে যোগ হয়। আর দেশে প্রতিবছর কুটিরশিল্পে ১৭ লাখ কর্মক্ষম লোক যুক্ত হয়, যা বেকার সমস্যার সমাধানের একটি অন্যতম মাধ্যম বলে বিবেচিত। তাই সরকারকে কুটিরশিল্প রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।

জাফর ইসলাম : প্রাবন্ধিক

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম