Logo
Logo
×

সাহিত্য সাময়িকী

ফকিন্নী জমিলা সমীপে প্রেমোত্থাপনের বয়ান

Icon

উম্মে সায়মা

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কবি আবদুল হাই শিকদারের নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘ফকিন্নী জমিলা সমীপে প্রেমোত্থাপনের বয়ান’ প্রকাশিত হয়েছে নাগরী প্রকাশন থেকে। প্রেম-বিরহ এবং জীবনদর্শনের ৪৭টি কবিতা দিয়ে সাজানো হয়েছে বইটি। সূচিপত্রে চোখ রাখলেই বোঝা যায় আবদুল হাই শিকদারের কবি-হৃদয়ের বিস্তার। বিভিন্ন ছন্দে লেখা এ বইয়ের কবিতাগুলো পাঠক-রুচিতে নতুন স্বাদ যোগ করবে। মওলানা ভাসানীর দীর্ঘ ছায়ায় আশৈশব বেড়ে ওঠা এ কবির প্রায় সব লেখাই জীবনবোধে পূর্ণ।

‘মানুষ হওয়া’ কবিতায় যেমন বলেছেন-‘অমানুষদের মানুষ করার যন্ত্র কোথায় পাই? সে সন্ধানে ব্যাকুল যারা সে মানুষকে চাই/ ভূত তাড়িয়ে দেশটা করো আলোয় আলোকময়/ সে গৌরবে কাটবে দ্রুত অমঙ্গল, সংশয়/ মানুষ হওয়ার গর্ব তখন বাড়বে নিশ্চয়।’ আবার ‘নশ্বরতা ও পুনর্জন্ম’ কবিতায় তাকে ভিন্ন সুরে বলতে শুনি-‘ভোরগুলোকে সুযোগ পেলেই এখন/ গালাগাল করি/ আমার সবকটি ভোরই আসার সময়/ একটি করে সন্ধ্যা নিয়ে এসেছিল/ দিনের অসুখও ছিল একই রকম/ যতই ব্যতিব্যস্ততা থাক/ কাজকর্ম শিকায় তুলে/ গৃহপালিত হাঁস-মুরগির মতো/ সুড়সুড় করে ঢুকে যেত রাত্রির খোঁয়াড়ে।’

এ বইয়ের ‘সপ্তম কাণ্ড’ কবিতায় কবি প্রেমের আহ্বান ছড়িয়ে দিয়ে বলেন-‘তোর দেখাটা না পাই যদি আমি/ কোন বালটা ছিঁড়তে পথে নামি/ গুষ্টি ধরে পুষ্টি খেয়ে মোটা/ শয্যাশূন্য কেবল কথার খোঁটা/ যেদিকে তোমার নজর পড়লো বানু/ সেখানে খাড়া আছি আমি এই কানু/ খরায় খরায় পুড়ে পুড়ে দেশ ফাটা/ বোঝে না বেকুব মেজোভাইর শালিকাটা/ মাঝরাত্তিরে ঝড়ে কাঁপে মাস্তুল/ নদী ও পাহাড় স্রোতবাহী স্কুল/ পুষ্প পুষ্প করে করে যারা মরে/ তাদের শয্যা নেই রমণীর ঘরে/ তুই ছাড়া আর কেয়ার করি না কারে/ ইচ্ছে হলো তাই তো মরিবারে।’

অন্যদিকে ‘পড়তে পড়তে দেখা’ কবিতায় ভিন্ন এক কবির দেখা পাওয়া যায়-‘হোঁচট খেয়ে পড়তে পড়তে দেখি/ দিন চলে যায় ক্রাচে ভর দিয়ে একী/আর রাতগুলো পালিয়েছে কোহকাফে আঁকাবাঁকা ধোঁয়া/ কেরানি কবিরা ঝড় তোলে কফি-কাপে/ এই কোহকাফ কোন ভূগোলের জানি না/ হয়তো কুয়াশা তবে এটা পানি না/ আমি লাশ নিয়ে কবরেই হাঁটা ধরি/ সময় অজানা সঙ্গে ছিল না ঘড়ি/ প্রেমের সমাধি লিখে গেছে নজিবর/ এখানে বাতুল বাংলা কবিতা/ তার নেই কোনও ঘর।’

বস্তুত, আবদুল হাই শিকদারের কবিতা যেন সেই দিনবদলের গান, যা সময়ের ঘুণপোকাকে পরাজিত করে বাঁচিয়ে রাখে নতুন দিনের স্বপ্ন। মুক্তিযোদ্ধা এ কবির স্বপ্ন ছিল চে গুয়েভারা হওয়ার। লেখালেখির শুরু স্কুলজীবন থেকেই। পেশাজীবন শুরু সাংবাদিকতা দিয়ে, আবারও ফিরে এসেছেন সেই পেশাতেই। মাঝখানের ষোলো বছরের সফরটাকে ফিরে দেখলে দেখা যাবে সেই রাস্তার প্রতিটা বাঁকের পথনির্দেশিকায় লেখা রয়েছে ‘উপেক্ষা’ শব্দটির ইউটার্ন।

পঁচিশের বইমেলা উপলক্ষ্যে প্রকাশিত তার ‘ফকিন্নী জমিলা সমীপে প্রেমোত্থাপনের বয়ান’ বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন ধ্রুব এষ। মূল্য : ২৮০ টাকা মাত্র।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম