
প্রিন্ট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে লাভলু মিয়া (৫০) নামে একজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শনিবার দুপুরে বদরগঞ্জ পৌরশহরে একটি দোকানঘরের ভাড়া নিয়ে এ ঘটনা ঘটে। জেলা বিএনপি এ ঘটনায় তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। এদিকে মাগুরার শালিখায় দলের সদস্য ফরম বিতরণ নিয়ে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। ব্যুরো ও প্রতিনিধির পাঠানো খবর-
রংপুর : জানা গেছে, বদরগঞ্জ পৌরশহরের ঢেউটিন ব্যবসায়ী জাহিদুল হক জোয়ারদার একই এলাকার ইশতিয়াক বাবুর দোকানঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। সম্প্রতি দোকান ছেড়ে দেওয়ার জন্য ইসতিয়াক বাবু ভাড়াটিয়া জাহিদুল হককে নোটিশ দেন। এ নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। পরে ব্যবসায়ী জাহিদুল উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হককে বিষয়টি জানান। অন্যদিকে ইশতিয়াক বাবু যান উপজেলা বিএনপির নেতা সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের কাছে। শনিবার সকাল থেকে উভয়পক্ষ শহরে মহড়া দেয়। পরে মানিকের লোকজন জাহিদুলের পক্ষে দোকান খুলে দেওয়ার জন্য মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। এতে বাধা দেয় মোহাম্মদ আলীর লোকজন। একপর্যায়ে দুপক্ষ দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ছোরা, বল্লম ও তির-ধনুক নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় পথচারী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হন। পাঁচজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে লাভলু মিয়া সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত লাভলু মধুপুর ইউনিয়নের রাজামরামপুর গ্রামের মহসীন আলীর ছেলে। চিকিৎসাধীনরা হলেন-কাচাবাড়ি শহপাড়ার আফছার আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম ও রুহুল আমীনের ছেলে মিঠু মিয়া এবং বৈরামপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোক্তারুল হক ও কালুপাড়ার কলিম উদ্দিনের ছেলে মোন্নাফ আলী। বাকি ১৫ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
বিএনপির জেলা কমিটির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু বলেন, সংঘর্ষে আমাদের একজন দলীয় কর্মী লাভলু মিয়া নিহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ আলী সরকার যুগান্তরকে বলেন, শহিদুল হক মিলন সাবেক শিবির ক্যাডার ও জামায়াতের সদস্য। পরে দলবদল করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তার ভেতরে এখনো জামায়াত-শিবিরের চেতনা রয়েছে। তাই তিনি গ্রাম থেকে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে এই সংঘাত করেছেন। মূলত তিনি বদরগঞ্জে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইছেন।
তবে শহিদুল হক মানিক বলেন, এখানে দোকান ঘরের ভাড়া নিয়ে নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ হয়েছে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা নিজেরাই সংগঠিত হয়ে করেছে। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।
বদরগঞ্জ থানার ওসি একেএম আতিকুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনার জড়িতদের ধরতে অভিযান চলবে।
এদিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তিন বিএনপি নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা বিএনপি। এরা হলেন-বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিক ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কালুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারমান শহিদুল হক মানিক।
মাগুরা : শালিখা উপজেলার ধনেশ্বরগাতী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার সকালে ফরম বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মাগুরা জেলা বিএনপি আহ্বায়ক আলি আহমেদ। বেলা ১১টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী এবং কাজী সালিমুল হক কামাল সমর্থিত দুটি পক্ষের স্থানীয় নেতা ইনজিল লস্কর এবং সবেদ বিশ্বাসের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে রয়েছেন-ফিরোজ হোসেন, মন্টু মিয়া, আবদুর রাজ্জাক ও সেলিম।