
প্রিন্ট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৯ পিএম

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাশ হওয়ার পর উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায়ও সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশ হয়েছে। দীর্ঘ বিতর্কের পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ১২৮-৯৫ ভোটে বিলটি পাশ হয়। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরই বিলটি আইনে পরিণত হবে। তবে বিরোধী দল কংগ্রেস জানিয়েছে, তারা বিলটি নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবে। এছাড়া মুসলিমদের ওয়াকফ বোর্ডে দুজন অমুসলিম সদস্যের বাধ্যতামূলক অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব সংশোধিত বিলে করা হয়েছে। খবর এনডিটিভি, হিন্দু।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (যোগাযোগ) জয়রাম রমেশ বলেন, শুক্রবার ভোরে পার্লামেন্টে পাশ হওয়া ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল সংবিধানসম্মত কিনা তা জানতে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হবে কংগ্রেস।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে জয়রাম রমেশ এই বিলের বিরুদ্ধে চলমান আইনি পদক্ষেপের রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি দলের আইনি চ্যালেঞ্জগুলোর ওপর আস্থা প্রকাশ করে বলেন, মোদি সরকারের যেসব পদক্ষেপকে কংগ্রেস ভারতীয় সংবিধানের নীতিগুলোর ওপর আঘাত হিসাবে দেখে সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, আমরা আত্মবিশ্বাসী এবং ভারতের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত নীতি, বিধান ও প্রথাগুলোর ওপর মোদি সরকারের যেকোনো ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাব। সংশোধিত বিলে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডগুলোতে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করারও প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রস্তাবের অনেকগুলোরই বিরোধিতা করছে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন। তাদের ভাষ্য, ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমদের অন্তর্ভুক্তি একেবারেই বেমানান, কেননা অমুসলিম সদস্যরা মুসলমানদের রীতিনীতির ব্যাপারে খুব বেশি জানবেন না।
তবে বিজেপি সরকার বলছে, তারা মুসলিমদের ধর্ম পালন বা ওয়াকফ সম্পত্তিতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করছে না, কেবল ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে চাইছে। বুধবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য থাকবে না বলে বিরোধীদের আশ্বস্ত করতে চাইলেও বৃহস্পতিবার সংখ্যালঘুবিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, ওয়াকফ বোর্ড একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা। এমন সংস্থায় কেবল মুসলিমরা থাকবেন, এটা কীভাবে হয়? ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিত। তিনি আরও বলেন, ২২ সদস্যের বোর্ডে সর্বোচ্চ চারজন অমুসলিম সদস্য থাকতে পারবেন। ফলে মুসলিমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবেন, এ কথা নিশ্চিত। সংশোধিত এ বিলে অন্তত পাঁচ বছর ধর্মকর্ম করেছেন এমন মুসলিমদেরই তাদের সম্পত্তি ওয়াকফ করার সুযোগ দিতে বলা হয়েছে। ২০১৩-র আগেও এমনই নিয়ম ছিল। তবে কেউ সম্পত্তি ওয়াকফ করার আগে অবশ্যই উত্তরাধিকার, বিশেষ করে নারীদের প্রাপ্য মিটিয়ে দিতে হবে। বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত নারী ও এতিমদের সুরক্ষাও নিশ্চিত করতে হবে।