
প্রিন্ট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১১ পিএম
আগামী বাজেটে নতুন করে করছাড় নয়: এনবিআর চেয়ারম্যান

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট হবে ব্যবসা বান্ধব ও জনকল্যাণমুখী। কর ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, সৎ ব্যবসায়ী ও নিয়মিত করদাতাদের জন্য স্বস্তি থাকবে। নতুন করে কোনো কর ছাড় নয়। কালো টাকা বন্ধের চেষ্টা থাকবে। শনিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) এক কর্মশালায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এসব কথা বলেন। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) ও ইআরএফ যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালার বিষয় ছিল : ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য দেশীয় রাজস্ব সংগ্রহ : বাংলাদেশের জন্য নীতি সংস্কার অগ্রাধিকার।’ সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক আবু ইউসুফ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রথম আলোর অনলাইন বিভাগের প্রধান শওকত হোসেন মাসুম, ইআরএফের-সভাপতি দৌলত আক্তার মালা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
আবদুর রহমান খান বলেন, আসন্ন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার ব্যবস্থা বাতিলের চেষ্টা করা হবে। তবে, যদি আমরা এটি পুরোপুরি বাতিল করতে ব্যর্থ হই, তাহলে অন্তত করহার বৃদ্ধি করে আদর্শ করহারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করব। তিনি বলেন, বর্তমানে আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবস্থানের ভিত্তিতে বিভিন্ন কর হার প্রযোজ্য। জমি ও অ্যাপার্টমেন্টের প্রকৃত মূল্য বিবেচনায় এই হার আদর্শ করের চেয়ে কম। এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা করহারকে স্বাভাবিক করের হারের কাছাকাছি আনতে চাই।’
তিনি বলেন, কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকা সত্ত্বেও যারা আয়কর রিটার্ন দেন না, তাদের নোটিশ দেওয়া শুরু হয়েছে। এখন লোকজন হয়তো বলা শুরু করবে, আমরা তো খুব ঝামেলায় আছি। এনবিআর চেয়ারম্যান আরও জানান, আগামী বাজেটে নতুন করে কোনো কর অব্যাহতি দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আমরা চিন্তা করেছি, বিদ্যমান কর অব্যাহতিও কমাব, উঠিয়ে দেব এবং যারা কম হারে দেয়, তাদের বাড়িয়ে দেব।
আবদুর রহমান খান বলেন, প্রকৃত অর্থে আগামী বাজেট হবে ব্যবসাবান্ধব ও জনকল্যাণমুখী। কিছুদিন ধরে এনবিআর যে কাজগুলো করেছে, এর মাধ্যমে বিষয়টি বুঝা যাচ্ছে। যেমন এ বছর দুইবার সয়াবিন তেলের শুল্ক কমানো হয়েছে। দুইবার চিনির শুল্ক কমানো হয়েছে। এছাড়া খেজুর, ডাল, ডিম, চাল, পেঁয়াজ প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছি। তার সুফলও পাওয়া গেছে। এই শুল্কছাড়ের ফলে সরকার কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। তবে আমরা সেগুলো চিন্তা করিনি। আমরা জনস্বার্থ চিন্তা করেছি।’ তিনি আরও বলেন, কর ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই সঙ্গে যারা সৎ ব্যবসা করে নিয়মিত কর দেন, তাদের জন্য স্বস্তি থাকবে। নতুন করে কোনো কর ছাড় দেওয়া হবে না।
শওকত হোসেন বলেন, বিগত সময়ে কর ব্যবস্থাপনা নিয়ে যেসব চিন্তা-ভাবনা হয়েছিল, তা ছিল অনেক বেশি গতানুগতিক। সেগুলোর কিছুটা দাতাদের ইচ্ছায়, কিছুটা সরকারের যা মনে হয় সেভাবে এবং কিছুটা চাপ থেকে হয়েছে। তবে এখন সুযোগ এসেছে পরিকল্পিতভাবে কিছু করার। আবু ইউসুফ বলেন, দেশের আর্থিক উন্নতি, পরনির্ভরশীলতা কমানো ও আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে দেশের ভেতরে কর আহরণ বৃদ্ধি করা অত্যাবশ্যক। কিন্তু কর আহরণ ও কমপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রে অবকাঠামো সমস্যার কারণে দেশের কর-জিডিপি হার এখনো অনেক কম। দেশে রাজস্ব-জিডিপির হার বেশ কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ১০ শতাংশের নিচে রয়েছে। তিনি বলেন, গত বছর এটি আরও কমে ৮ শতাংশের নিচে নেমেছে। প্রত্যক্ষ কর আহরণ কম হওয়ায় রাজস্ব আহরণের জন্য সরকার ভ্যাট ও বাণিজ্য কেন্দ্রিক রাজস্ব আদায়ে বেশি নির্ভর করছে।