যুবকরা পথ হারালে জাতি হেরে যাবে: শফিকুর রহমান

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, রাজনীতি বড়ই জটিল কাজ। এখানে মাথা ঠিক রেখে চলতে হবে। এখানে লোভ-লালসা, ভয়-আতঙ্ক অনেককিছু তোমাদের ছুড়ে দেওয়া হবে। এ জায়গায় যারা স্থির থাকতে পারবে, আশা করা যায়, তারা ভালো কিছু দিতে পারবে। আর এখানে যারা হেরে যাবে, তারা নিজেরা হেরে যাবে এবং জাতিকেও হারিয়ে দেবে। আমরা দোয়া করি যুবকরা যেন কোনো অবস্থায় পথ না হারায়। তারা ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকব।
রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির উদ্যোগে রাজনৈতিক নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আয়োজক দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও দলের জেনারেল সেক্রেটারি নিজামুল হক নাঈমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, আমজনতা পার্টির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, ১২ দলের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট এহসানুল হুদা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আহমদ আব্দুল কাইয়ুম। বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এবি পার্টির এবিএম নাজমুল। গণঅধিকার পরিষদের মোহাম্মদ মশিউর রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম প্রমুখ। এছাড়া ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ফেডারেশন সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহীনুর রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ।
সেই ফ্যাসিস্টদের বিচার নিশ্চিত দেখতে চাই : ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানান, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যারা সেলিম তালুকদারকে হত্যা করে পুরো পরিবারকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে, সেই ফ্যাসিস্ট-জালিমদের বিচার দেখতে চাই। গড়িমসি করে সময়ক্ষেপণ করার দরকার নেই। অল্প সময়ের মধ্যেই খুনের পরিকল্পনাকারী, নির্দেশদাতা এবং বাস্তবায়নকারীদের বিচার ও শাস্তির আওতায় দেখতে চাই। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ সেলিম তালুকদারের নবজাতক মেয়ে সাইমা সেলিম রোজাকে দেখতে সোমবার ঝালকাঠি আসেন জামায়াত আমির। এ সময় এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঝালকাঠি জেলা আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে পথসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি ও বরিশাল অঞ্চল পরিচালক অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসেন হেলাল, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ। পথসভা শেষে শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকায় শহিদ সেলিমের শ্বশুরবাড়িতে এসে দশ দিনের রোজাকে কোলে তুলে নেন তিনি। এ সময় শফিকুর বলেন, এ শিশুটি শহিদের সন্তান হিসাবে মর্যাদার সঙ্গে বড় হবে ইনশাআল্লাহ।
বরগুনার সেই কিশোরীর পরিবারের দায়িত্ব নিলেন জামায়াত আমির : বরগুনা (দক্ষিণ) প্রতিনিধি জানান, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ছোট ভাই সাবালক না হওয়া পর্যন্ত ওই পরিবারের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন ডা. শফিকুর রহমান। সোমবার বেলা ১১টায় বরগুনায় ওই কিশোরীর বাড়ি গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এ কথা বলেন তিনি। তিনি ভুক্তভোগী পরিবারটিকে ন্যায়বিচার পেতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় হেলিকপ্টারে শফিকুর রহমান বরগুনা সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে পৌঁছান। এরপর শহরের কালিবাড়ী এলাকায় ভুক্তভোগীর বাড়িতে যান তিনি। এ সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। তিনি এই পরিবারের শিশুদের লেখাপড়া ও চিকিৎসা খরচসহ পরিবারের ব্যয়ভার জামায়াতে ইসলামী বহন করবে বলে ঘোষণা দেন। এছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোয় বিএনপিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই মামলার অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে কাজ করবে জামায়াতে ইসলামী।
পরে বরগুনার টাউন হল মাঠে এক পথসভায় জামায়াতের আমির বলেন, অবুঝ শিশুকে নির্যাতনকারী জালেমরা মামলা করার অপরাধে শিশুর বাবাকে হত্যা করেছে। আমরা এসেছি তাদের দুঃখকে ভাগ করে নেওয়ার জন্য। তাকে খুন করার মাধ্যমে এই পরিবারকে অভিভাবকশূন্য করে ফেলা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা তাদের আশ্বস্ত করে বলেছি, আপনারা ভয় পাবেন না। আপনারা সাহস রাখুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।