Logo
Logo
×

শেষ পাতা

সাজেকে দুর্লভ পাহাড়ি ময়না

Icon

সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাজেকে দুর্লভ পাহাড়ি ময়না

বসন্তের সকাল। ফাল্গুনের বাতাস বইছে। আকাশ কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন। সাজেকের রুইলুই পাড়া থেকে কংলাক পর্যন্ত সড়কের দুপাশে ফুটেছে মান্দার ফুল। সকালের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে এসব ফুলের মধু পান করতে আসে হরেক রকমের পাখি। চন্দনা টিয়া, সোনা কপাল হরবোলা, কালো ঝুঁটি বুলবুলসহ বিভিন্ন পাখির বিচরণ চোখে পড়ে। খাগড়াছড়ির সাজেকের অক্ষত বনে এখনো টিকে আছে কিছু দুর্লভ পাখি। এদের মধ্যে অন্যতম পাহাড়ি ময়না বা হিল ময়না। রুইলুই পর্যটন কেন্দ্রের রুনময় রিসোর্ট লাগোয়া উঁচু বৃক্ষে দলবেঁধে আসে পাহাড়ি ময়নার ঝাঁক। রিসোর্টের পাশে এক মরা গাছে এক সাথে বসে আছে অন্তত ৭টি ময়না। এমন দৃশ্য বেশ বিরল। কয়েকটা ছবি তুলতেই উড়াল দিল ময়নার ঝাঁক।

খাগড়াছড়ি, রাঙামাটিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে বিপন্ন হয়ে উঠছে এই ‘হিল ময়না’। শিকার, পাচার ও আবাসস্থল নষ্ট হওয়ায় হিল ময়না বর্তমানে দুর্লভ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দ্রুত পোষ মানা ও মানুষের আদলে কথা বলতে পারার কারণে শৌখিন পাখি পালকদের কাছে এর চাহিদা রয়েছে। ফলে বাড়ছে শিকারও।

খাগড়াছড়ির বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ফরিদ মিঞা বলেন, হিল ময়না আমাদের দেশে পাহাড়ি অঞ্চলের দুর্লভ পাখি। গত বছরের ১৯ জুন বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে পাচারকারীদের হাত থেকে ছয়টি হিল ময়না উদ্ধার করে। পরে তা বনে অবমুক্ত করা হয়। মূলত বন্যপ্রাণী ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী কোনো সংরক্ষিত বা পরিযায়ী পাখি হত্যা ও শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ। ময়না ও টিয়া আইনে শিডিউলভুক্ত রক্ষিত প্রাণী। কেউ যদি ময়না শিকার করে তাহলে এক বছরের জেল ও ১ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। কেউ যদি পুনরায় একই অপরাধ করে তাহলে দুই বছরের জেল এবং ২ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে। তিনি আরও বলেন, খাগড়াছড়ি বন বিভাগ হিল ময়না পাচার ও শিকার রোধে তৎপর রয়েছে।

খাগড়াছড়ির বন্যপ্রাণীবিষয়ক আলোকচিত্রী সবুজ চাকমা বলেন, হিল বা পাহাড়ি ময়না দ্রুত পোষ মানে এবং মানুষের অনুকরণে কথা বলতে পারে। সে কারণে এর চাহিদা বেশি। শৌখিন পাখিপ্রেমিকদের কারণে হিল ময়না বিপন্ন। প্রতি জোড়া ময়না ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ময়নার গায়ের পালক উজ্জ্বল কালো। পা ধবধবে হলুদ। এরা সাধারণত বৃক্ষের উঁচু ডালে থাকতে পছন্দ করে। লম্বায় দশ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। বাংলাদেশ, নেপালসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এদের দেখা মেলে। বায়োডাইভার্সিটি কনজারভেশন সোসাইটি অব সিএইচটির সংগঠক সাথোয়াই মার্মা বলেন, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, মহালছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, পানছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলার পাহাড়ি অরণ্যে হিল ময়না শিকারের তৎপরতা বেশি। এসব ময়না ঢাকা ও চট্টগ্রামেও পাঠানো হয়। তবে এখন গাছপালা কমে যাওয়ায় পাখির সংখ্যাও কমে গেছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম