স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন
এপ্রিলে অধ্যাদেশ জারি করে নির্বাচন হতে পারে জুনে
জেলা পরিষদকে শক্তিশালী করে স্থানীয় পর্যায়ের পরিকল্পনা প্রণয়নের মূল দায়িত্ব দিতে হবে

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
দেশের স্থানীয় সরকারকে ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত ‘স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন’। সেখানে বলা হয়েছে, এপ্রিলের মধ্যে সংশোধন করা আইনের অধ্যাদেশ প্রকাশ করে জুনের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা যেতে পারে।
১৮ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রস্তুত করা প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। কমিশন প্রধান অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রাথমিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে ১৪টি ভাগে ২১০টি সুপারিশ করা হয়েছে। ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’র সভায় আলোচনার সুবিধার্থে কমিশন প্রাথমিক সুপারিশমালাও তৈরি করে জমা দিয়েছে। যেটা পরবর্তীতে সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে। এই প্রতিবেদনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন নাম প্রস্তাব করেছে, স্থানীয় সরকার জনসংগঠন ও জনপ্রকৌশল সেবা।
আরও দেখা গেছে, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে জেলা পরিষদকে আরও শক্তিশালী করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নিতে আগামী ৩ মাসের মধ্যে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক মর্যাদাসম্পন্ন একটি স্থায়ী ‘স্থানীয় সরকার কমিশন’ গঠনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে, উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আদালতের কার্যক্রম সম্প্রসারণ, স্থানীয় সরকারের ৫টি প্রতিষ্ঠানকে আলাদা আইনের স্থলে দুটি মৌলিক আইনের অধীনে আনা। আর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগের কার্যক্রমে ভারসাম্য রক্ষা, একই দিনে স্থানীয় সরকারের সব প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন আয়োজন এবং নির্দলীয় প্রতীকে ভোট অনুষ্ঠান, বাংলাদেশকে প্রদেশে বিভক্ত করার পরিবর্তে জেলা পরিষদকে শক্তিশালী কাঠামোতে রূপান্তর করা। এলজিইডির প্রকৌশলী এবং কর্মকর্তাদের ক্যাডারভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া সব প্রতিষ্ঠানের মতো জেলা পরিষদেও সরাসরি ভোট এবং কার্যক্রম ও কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তন আনা, সরকারি চাকরিজীবীদেরও ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ দান এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার বিধান বাদ দেওয়া। পাশাপাশি সংরক্ষিত নারী আসন পদ্ধতি পরিবর্তন করে পরিষদের এক-তৃতীয়াংশ ওয়ার্ডে (একক অসন) ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ, জাতীয় সরকারের আদলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংসদীয় পদ্ধতির আদলে পুনর্গঠন, নির্বাচন ও কার্যপদ্ধতি পুনর্বিন্যাসে ‘স্থানীয় সরকার সার্ভিস’ নামে নিজস্ব সার্ভিস কাঠামো গঠন, প্রতিটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সংগঠন কাঠামো দুটি (বিধানিক ও নির্বাহী) প্রধান অংশে বিভক্ত করা, ১০ বছরের মধ্যে গ্রাম-শহরের পার্থক্য কমিয়ে আনাসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগে আইনি ও সাংগঠনিক কাঠামোতে বড় ধরনের সংস্কার করা।