জাতীয় নাগরিক কমিটির আলোচনা সভা
সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দুর্নীতি বন্ধ করে জনগণের জন্য রাজনীতি করতে রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। সংস্কারের আগে কোনোভাবেই নির্বাচন হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শুক্রবার রাজধানীর বাংলামোটরের জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় সারোয়ার তুষার এসব কথা বলেন। ভাষা আন্দোলন থেকে চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান : বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পুনর্গঠনের ঐতিহাসিকতা শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আপনারা বুঝেন শুধু দুর্নীতি আর লুটপাট। এগুলো করে বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চারবার চ্যাম্পিয়ন করছেন। আর আওয়ামী লীগ পুরো দেশকে ছিদ্র করে পালিয়ে গেছে। এজন্য আপনাদের নির্বাচনের আন্দোলনে দেশের মানুষ সাড়া দেয় না। কারণ আপনারা শুধু ডামি আন্দোলন করছেন। অথচ জুলাই আন্দোলনে ছোট ছোট ছাত্রদের ডাকে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমেছে। কাজেই ৩৬ জুলাইকে অবহেলা করে আপনারা রাজনীতি করবেন? আমাদের আর এই মহড়া দেখাইয়েন না।’
রাজনৈতিক দলগুলোর চাপে সংবিধান সংস্কার কমিশন গোঁজামিল করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আপনারা গোঁজামিলের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর চাপে গোঁজামিল দেবে না। জাতীয় নাগরিক কমিটির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের আগে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান হয়েছে। ছাত্রলীগকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আপনারা (বিএনপি) সেই পরিণতির দিকে যাবেন না। আপনাদের ছাত্র সংগঠনের নেতারা হুঙ্কার দিয়ে রাজনীতি করতে পারবে না। রাজনীতি করতে হলে জনগণের জন্য করেন। প্রতিদিন চাঁদাবাজি করছেন সেগুলো বাদ দেন। আপনারা এই সরকারের প্রতিটি কাজে বাধা দিচ্ছেন। ঘোষণাপত্র করতে দিচ্ছেন না, সংবিধান বাতিল করতে দিচ্ছেন না, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ করতে দিচ্ছেন না, অন্যদিকে সব দোষ দিচ্ছেন ছাত্রদের ওপর। নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই আপনারা ক্ষমতায় চলে গেছেন। আমরা বলতে চাই-সংস্কারের আগে কোনোভাবেই নির্বাচন হবে না।
যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মোমেন্টাম ছিল ১৪ জুলাই। কারণ ওইদিন প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দিয়েছিল। তার এমন বক্তব্যের পর সারা দেশে শিক্ষার্থীরা রাতেই রাস্তায় নেমেছেন এবং আমি রাজাকার বলে স্লোগান দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনেই ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে শুধু ধানের শীর্ষে ভোট দেওয়ার কারণে একজন নারীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। এই ধর্ষণের পর বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বন্ধ হয়নি। আগামীর বাংলাদেশে এই ধরনের অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলবে ছাত্ররা।