Logo
Logo
×

শেষ পাতা

নিয়োগবঞ্চিত শিক্ষকদের ওপর ফের জলকামান

আটক তিন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নিয়োগবঞ্চিত শিক্ষকদের ওপর ফের জলকামান

বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে সমাবেশ থেকে শিক্ষকদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে আবারও বাধা দিয়েছে পুলিশ। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুপারিশপ্রাপ্ত এসব সহকারী শিক্ষক রোববার দুপুরে সচিবালয়ের সামনে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ জলকামান ও টিয়ারশেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। এ সময় বেশ কয়েকজনকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। পরে তিনজন ছাড়া বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, রোববার সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ১১ দিনের মতো অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন। সেখান থেকে পদযাত্রা করে সহস্রাধিক মানুষ হাইকোর্ট মাজারের সামনে যান। সেখানে সচিবালয়মুখী রাস্তায় তারা পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। তখন আন্দোলনকারীরা ওই রাস্তায় অবস্থান নেন। পুলিশ জলকামান থেকে পানি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পরে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করা হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা যে যার মতো দৌড়ে ওই এলাকা ত্যাগ করেন। কয়েকজনকে ধরে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তুলতে দেখা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে তিনজন ছাড়া অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আটক তিনজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন-নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা থেকে আসা মাহমুদুল হক ফয়সাল ও কুমিল্লার উজ্জল হোসেন। তারা দুজনই তৃতীয় ধাপে (ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগ) নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী শিক্ষক পদে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, চাকরিতে যোগদানের বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। তারা বলছেন, তাদের যৌক্তিক আন্দোলনে তিন দিন পুলিশ বলপ্রয়োগ করেছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবারও তাদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ করার পাশাপাশি লাঠিপেটা করা হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে তাদের সমাবেশ শুরু হয়। দুপুর ১টার পর চারজন প্রতিনিধি মন্ত্রণালয়ে যান। এরা হলেন-তালুকদার পিয়াস, জেরিন আক্তার, নাহিদ ইসলাম ও সৌরভ আহমেদ।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, আন্দোলনকারীরা দুপুরের পর পদযাত্রা করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট মাজারের সামনে এসে তারা প্রেস ক্লাবের দিকে না গিয়ে সচিবালয়ের দিকে রওনা দেন। তখন ব্যারিকেড দিয়ে তাদের বাধা দেওয়া হয়। ব্যারিকেড ভেঙে তারা সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারী নাজমুন নাহার সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের সুপারিশপ্রাপ্তরা এখন চাকরি করছেন, অথচ একই প্রক্রিয়ায় তৃতীয় ধাপের সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। তাদের ওপর চরম অন্যায় করা হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়া হবে না।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি হয়নি : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগে ৬ হাজার ৫৩১ জন নির্বাচন করে ফলাফল বাতিল ঘোষণা করে হাইকোটের রায় স্থগিত করেননি চেম্বার আদালত। আবেদনকারীপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক ১ দিন সময় (নট টুডে বা রোববার নয়) মঞ্জুর করেন।

এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগে ৬ হাজার ৫৩১ জন নির্বাচন করে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফল বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্ট রায় দেন। রায় স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে গত সপ্তাহে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আবেদনটি রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় ৭৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে। আদালতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুজ্জামান ভূঁইয়া ও ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ। পরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রস্তুতির জন্য সময় চাওয়া হয়। আদালত এক দিন সময় মঞ্জুর করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম