বাংলায় গান আর গাইবেন না প্রতুল

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

‘আমি বাংলায় গান গাই’ খ্যাত কলকাতার বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় মারা গেছেন। দীর্ঘ সময় রোগভোগের পর শনিবার ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ৮৩ বছর বয়সি এই সংগীতশিল্পী মৃত্যুর আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
বছরের শুরুতেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন প্রতুল। সেখানে তাকে পরীক্ষা করে দেখেন স্নায়ু এবং নাক-কান-গলার (ইএনটি) বিশেষজ্ঞরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অস্ত্রোপচারের পর তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। এর মধ্যে তিনি আবার অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণ ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে ওঠায় তিনি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীতাঙ্গন। তার মৃত্যুর খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য তার দেহ রাখা ছিল রবীন্দ্রসদনে। বিকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শিল্পীকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সমবেদনা জানান তার স্ত্রী সর্বাণী মুখোপাধ্যায়কে। রবীন্দ্রসদনে গান স্যালুটের পর মরদেহ ফের তুলে দেওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে। কারণ, মৃত্যুর আগে প্রতুল মুখোপাধ্যায় দেহদানের অঙ্গীকার করে গিয়েছেন।
১৯৪২ সালের ২৫ জুন অবিভক্ত বাংলার বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তার বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। দেশভাগের সময় তিনি সপরিবার ভারতে পাড়ি জমান। ছোটবেলা থেকেই তিনি নিজের লেখা গানে সুর দিতেন। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানটি তাকে সবার মাঝে পরিচিত করে তোলে। এ ছাড়া তিনি শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী ছিলেন।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় অ্যালবামের মধ্যে রয়েছে ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’, ‘যেতে হবে’, ‘ওঠো হে, স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’, ‘তোমাকে দেখেছিলাম’, স্বপনপুরে’, ‘অনেক নতুন বন্ধু হোক’, ‘হযবরল’, ‘দুই কানুর উপাখ্যান’, ‘আঁধার নামে’ ইত্যাদি।