Logo
Logo
×

শেষ পাতা

নিয়োগ ফিরে পেতে আন্দোলন

শিক্ষকদের ওপর জলকামান লাঠিপেটা

রোববারের মধ্যে দাবি পূরণের আলটিমেটাম, রাজপথে আত্মহত্যার হুমকি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শিক্ষকদের ওপর জলকামান লাঠিপেটা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়াদের নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলনরতদের লাঠিপেটা ও জলকামানের পানি ছুড়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগে এ ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষকরা রোববারের মধ্যে যোগদান নিশ্চিত না হলে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া এবং রাজপথে আত্মহত্যার হুমকি দেন তারা। এর আগে সোমবার ও শুক্রবার সড়ক অবরোধ করে লাঠিপেটার শিকার হন এসব শিক্ষক।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে কয়েকশ চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষক শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। এতে ওই এলাকায় যানজট লেগে যায়। প্রথমে পুলিশ তাদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করে। পরে ২টার দিকে পুলিশ জলকামান থেকে গরম পানি ছিটিয়ে ও ধাওয়া দিয়ে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। আটক করা হয় অন্তত ১৪ জন আন্দোলনকারীকে।

এরপর রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে সকাল ৯টা থেকে সুপারিশপ্রাপ্তরা শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হয়ে অবস্থান নেওয়া শুরু করেন। এ সময় তারা ‘সুপারিশপ্রাপ্ত করছে কে, এই সরকার এই সরকার’, ‘আমি কে তুমি কে, শিক্ষক শিক্ষক’, ‘প্রথম ধাপ চাকরি করে, আমরা কেন রাজপথে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

এছাড়াও তারা ‘হয়তো মোদের যোগদান নিন, নয়তো মোদের জীবন নিন’, ‘হয় নিয়োগ, নয় মৃত্যু’সহ নানা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এরপর দুপুর ১টার দিকে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এর কিছুক্ষণ পর লাঠিচার্জ এবং জলকামান থেকে পানি ছিটানো হলে দুপুর সোয়া ২টার দিকে তারা শাহবাগ মোড় ছেড়ে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন। ছত্রভঙ্গ করার সময় একাধিক আন্দোলনকারীকে আটক করতে দেখা যায় পুলিশকে।

শিক্ষকরা একই রকম তথ্য দিয়ে বলেন, আমরা মেধা দিয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। পুলিশ ভেরিফাই করেই আমাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের কেন আন্দোলন করতে হবে। আমাদের দাবি মানতে হবে। আমরা ৭ দিন ধরে একটি যৌক্তিক দাবির জন্য আন্দোলন করছি। কোনো উপদেষ্টা কথা বলছেন না। আমরা কী এই দেশের নাগরিক নই? আমরা তো ছাত্রদের পাশে ছিলাম। এখন আমাদের পাশে ছাত্র প্রতিনিধি নেই কেন?

৩১ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ৬ হাজার ৫৩১ জন। এরপর কোটা অনুসরণ করে এই ফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগ বঞ্চিত ৩০ প্রার্থী একটি রিট মামলা করেন।

পরে ৬ ফেব্রুয়ারি এই ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করেন হাইকোর্ট। রায়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেদিন থেকে আন্দোলন করে আসছেন তৃতীয় ধাপের সুপারিশপ্রাপ্তরা। তাদের দাবি, হাইকোর্টের এই রায় বাতিল করে তাদের নিয়োগ দিতে হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পর বিকালে আন্দোলনকারী জান্নাতুন নাঈম সুইটি, সামিয়া আক্তার ও নওরীন আক্তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিচার্জ ও আটকের নিন্দা জানিয়েছেন। তারা সরকারকে আলটিমেটাম দিয়ে ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া এবং রাজপথে আত্মহত্যার হুমকি’ দিয়েছেন।

এছাড়া আটকদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। রোববারের মধ্যেই যোগদান নিশ্চিত না হলে তারা মহাসমাবেশ করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খালেদ মনসুর বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে আন্দোলনকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এ সময় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম