ভ্যানচালককে বেঁধে পেটালেন ম্যাজিস্ট্রেট
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![ভ্যানচালককে বেঁধে পেটালেন ম্যাজিস্ট্রেট](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/03/59-679fd6c662454.jpg)
রাজবাড়ীতে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে কুকুরের তাড়া খেয়ে মালিক হিসাবে এক ভ্যানচালককে পুলিশ দিয়ে কার্যালয়ে ডেকে এনে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে একজন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে। শনিবার জেলা আদালতের একটি কক্ষে নির্মম নির্যাতনে আহত মো. আফজাল খাঁ (৩০) এখন রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় তিনি রাজবাড়ী সদর থানায় ওই ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
মো. সুমন হোসেন রাজবাড়ীর একনম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে কর্মরত। আর নির্যাতনের শিকার ভ্যানচালক মো. আফজাল খাঁ রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাড়াইজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
আফজাল খাঁ যুগান্তরকে বলেন, বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেন শ্বশুরবাড়ি এলাকায় গেলে একটি কুকুর তাকে ধাওয়া করে। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে কুকুরের মালিকের খোঁজ করেন। স্থানীয় কেউ তাকে জানায় কুকুরের মালিক আমি। তিনি ওইদিন রাজবাড়ী সদর থানার এক দারোগা দিয়ে আমাকে ডেকে পাঠান। শনিবার দুপুরের দিকে ভাইকে নিয়ে থানায় ওই দারাগোর সঙ্গে দেখা করলে জানান, ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেন আমাকে দেখা করতে বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, পরে ওই দারোগা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনের সঙ্গে ফোনে কথা বললে তিনি আমাদের বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টার দিকে তার কার্যালয়ে দেখা করতে বলেন। বিকালে ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দেখা করতে গেলে সঙ্গে থাকা সবাইকে তিনি কক্ষ থেকে বের করে দেন। এরপর তিনি চেয়ারের সঙ্গে আমার দুই হাত সামনের দিকে রশি দিয়ে বেঁধে লাঠি নিয়ে পাছায় থেমে থেমে আঘাত করেন। এভাবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত থেমে থেমে তিনি ২৫ থেকে ৩০টি আঘাত করেন। পরে নির্যাতনের বিষয়ে যেন কাউকে কিছু না বলি তা জানিয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেন।
আফজাল বলেন, আমি ব্যথায় হাঁটতে পারছিলাম না। দূর থেকে আমার মেজ ভাইসহ অন্যরা এগিয়ে এলে তাদের কাঁধে হাত রেখে কষ্ট করে সদর থানায় যাই। পুলিশ আমাকে চিকিৎসা নিতে বললে সদর হাসপাতালে ভর্তি হই। এরপর থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি।
আফজাল খাঁর বড় ভাই সাহেব আলী বলেন, বাড়িতে পুলিশ দেখে আমরা খুব চিন্তিত হই। পরে শনিবার দারোগার সঙ্গে দেখা করলে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলেন। ম্যাজিস্ট্রেট সুমন আমার ভাইকে অমানুষিক নির্যাতন করেছেন। আমরা এই নির্যাতনের বিচার চাই।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় আফজাল খাঁ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এলে তাকে ভর্তি করা হয়। তাকে এমনভাবে আঘাত করা হয়েছে যে, সুস্থ হতে অন্তত দুই মাস সময় লাগবে।
সুমন হোসেন বলেন, আমি তাকে ডেকে এনে আমাকে কুকুর তাড়ানোর বিষয়টি বলেছি। একটি মহল একে পুঁজি করে নানারকম কুৎসা রটাচ্ছে। তাকে পেটানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
পুলিশ সুপার মোছা. শামীমা পারভীন বলেন, নির্যাতনের শিকার আফজাল খার লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি জেলা ও দায়রা জজকে জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি দেখছেন। তিনি সিদ্ধান্ত দিলেই পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।