Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: ফরিদপুর-২

মাঠে বিএনপির শামা ওবায়েদ ও শহিদুল ইসলাম বাবুল

Icon

জাহিদ রিপন, ফরিদপুর

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মাঠে বিএনপির শামা ওবায়েদ ও শহিদুল ইসলাম বাবুল

ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের চারটি আসনে আওয়ামী লীগ ও তাদের সমমনা দল বাদে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। এর মধ্যে নির্বাচনি মাঠে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের আনাগোনাই বেশি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ এখনো ঠিক না হলেও তারা নিজ নিজ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় তাদের উপস্থিতির জানান দিচ্ছেন। শীতবস্ত্র বিতরণ, ওয়াজ-মাহফিল, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। জুলাই আন্দোলনে শহিদ কিংবা আহতদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন, অনুদান দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে জামায়াত এগিয়ে রয়েছে বলে আন্দোলনে আহত ও নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা ফরিদপুরের কোনো নির্বাচনি এলাকায় নেই।

ফরিদপুর-২ আসনটি নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনটিতে আগে থেকেই দুই হেভিওয়েট নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছিলেন। এর একজন হলেন বিএনপির সাবেক মহাসচিব কেএম ওবায়দুর রহমান আর অন্যজন আওয়ামী লীগের সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। এ দুজনের মৃত্যুর পর তাদের সন্তানরা নির্বাচনি হাল ধরেছেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগ অনুপস্থিত। বিএনপির হয়ে কেএম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু নির্বাচনি মাঠে সরব রয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২১ হাজার ৬০৯ জন। আসনটিতে আগাম নির্বাচনি তৎপরতা শুরু করেছেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু। দুজনই সমানতালে বিএনপির হয়ে মাঠে সরব রয়েছেন এবং দলের জন্য কাজ করছেন। নানা অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে কৌশলে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীর নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে আগামী ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে জামায়াতের প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতে পারে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

নগরকান্দা কৃষক দলের সভাপতি বিল্লাল হোসেন মোল্যা বলেন, শহিদুল ইসলাম বাবুল ক্লিন ইমেজের একজন ভালো মানুষ। তাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শহিদুল ইসলাম বাবুলকে পছন্দ করে। তিনি যেভাবে দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাকে দল মনোনয়ন দেবে বলে আশা রাখি।

আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে শহিদুল ইসলাম বাবুল যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ছাত্রদল থেকে শুরু করে যুবদল হয়ে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম জেল-জুলুম, ফ্যাসিবাদের মার খেয়ে, রক্তে রঞ্জিত হয়েছি। ১২৮টি মামলা কাঁধে নিয়ে এলাকার জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমার ত্যাগ বিবেচনা করে দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে তার প্রতিদান দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।

অন্যদিকে নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত শরীফ বলেন, বিএনপি নেতা কেএম ওবায়দুর রহমানের মৃত্যুর পর তার একমাত্র কন্যা বাবার মতো মানুষের বিপদে ছুটে যান এবং সাহায্য-সহযোগিতা করেন। বিএনপির দুর্দিনে হামলা-মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের কাছে ছুটে গেছেন। আমাদের বিশ্বাস এ আসনে শামা ওবায়েদ রিংকু মনোনয়ন পাবেন। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে যুগান্তরকে বলেন, গত ১৫ বছর মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এখন সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে চায়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে এখন ভাবছি না। জামায়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জামায়াত মাঠে তাদের কাজ করছে। আর আমরা আমাদের কাজ করছি। এছাড়া এখনো আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা করছে। এটি প্রতিহত করে সুষ্ঠু ভোটের দিকে নিয়ে যাওয়াই আমাদের কাজ। সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।

নগরকান্দা উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মাওলানা সোহরাব হোসেন বলেন, জামায়াত একটি সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক সংগঠন। দলীয় হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত ছাড়া কেউ তেমনভাবে প্রচার-প্রচারণা চালান না। তবে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। দলের নীতিনির্ধারণী মহল মনোনয়নের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে নাম ঘোষণা করবেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে ফরিদপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মো. আবু হারিচ মোল্যা যুগান্তরকে বলেন, আমরা সাংগঠনিকভাবে জেলার সব থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের কমিটিগুলো ঠিক করার জন্য কাজ করছি। আমাদের পার্লামেন্টারি নির্বাচনি কমিটি রয়েছে। আগামী নির্বাচনের জন্য মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনীত করা হবে। আশা করছি আগামী ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে প্রার্থীদের নাম বলতে পারব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম