বাবার কুলখানির আগের রাতে আটক যুবদল নেতার মৃত্যু
কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত।
কুমিল্লায় বৃহস্পতিবার রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নেওয়ার পর তৌহিদুল ইসলাম নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। তৌহিদ জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ইটাল্লা গ্রামের মোখলেছুর রহমান সরদারের ছেলে। আরকু কোম্পানি লিমিটেডে কর্মরত ছিলেন তিনি। গত ২৬ জানুয়ারি তৌহিদুল ইসলামের বাবা মারা যান। শুক্রবার ছিল তার বাবার কুলখানি। তৌহিদুলের ভাই আবুল কালাম আজাদ টিপু বলেন, বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে কয়েকজন ব্যক্তি আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যায়। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় আমার ভাইসহ আরেকজনকে নিয়ে এসে এক ঘণ্টা যাবৎ বাড়ির বিভিন্ন ঘরে তল্লাশি চালায়। পরে কোনো অস্ত্র না পেয়ে আমার ভাইকে আবারও তারা নিয়ে যায়। দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ আমাদের ফোন করে বলে গোমতী বিলাসের কাছে আমার ভাই আহত অবস্থায় পড়ে আছে। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। আমাদের হাসপাতালে যেতে বলে। আমরা প্রথমে কুমিল্লা সদর জেনারেল হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাই। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, জমি নিয়ে পাশের বাড়ির তানজিল ইসলামের সাথে ৪-৫ দিন আগে আমাদের ঝামেলা হয়েছিল। এ নিয়ে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেন।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, তৌহিদুল ইসলাম খুব ভালো ছেলে। ধার্মিক ছিল। পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধের কারণে তার পাশের বাড়ির লোকজন অভিযোগ করে। এ কারণে তাকে গ্রেফতারের পর নির্যাতন করা হয়েছে। তৌহিদুল ইসলামের লাশে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ারুল হক বলেন, তৌহিদুলের নামে থানায় কোনো মামলা নেই। তার দুই মেয়ে হাফেজ। এভাবে একজন ভালো ছেলের মৃত্যুর ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, হাসপাতালে আনার পরপরই তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাবে না। কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, আহত অবস্থায় তাকে গোমতী নদীর তীরের গোমতী বিলাসের সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এর চেয়ে বেশি আর কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সাইফুল মালিক বলেন, যুবদল নেতার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।