Logo
Logo
×

শেষ পাতা

সাংবাদিকদের টবি ক্যাডম্যান

হাসিনার প্রত্যর্পণে ভারত ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াবে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হাসিনার প্রত্যর্পণে ভারত ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াবে

ন্যায়বিচারের স্বার্থে ভারত জুলাই গণহত্যার প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলির পরামর্শক টবি ক্যাডম্যান। সোমবার ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ক্যাডম্যান। তিনি বলেন, এখানে ফেয়ার ট্রায়াল এনশিউর করা হবে। আমরা দেখাতে চাই ইন্ডিয়া তাকে বিচার থেকে রেহাই দেওয়ার পক্ষে দাঁড়াবে নাকি একটা ন্যায়বিচার হোক তার পক্ষে দাঁড়াবে।

টবি ক্যাডম্যান বলেন, আমরা আশা করি ইন্ডিয়া একটা ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াবে। সেভাবে আন্তর্জাতিক নর্মস মেনে তাকে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণ করবে। যাতে করে তিনি এখানে প্রপারলি নিজেকে ডিফেন্ড করতে পারেন। তার নিজের আইনজীবী দিয়ে নিজের কেসটাকে মেক আউট করতে পারেন। 

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে একজন পেশাদার হিসাবে কাজ করতে এসেছি এবং তাই করব। অতীতের কোনো ঘটনা, কারও কার্যকলাপ কিংবা পূর্বে আমার কাজের পরিধি কী ছিল তা একে প্রভাবিত করবে না। সবার জেনে রাখা ভালো, যেহেতু এই মামলাগুলো জটিল এবং এর কার্যবিধি সময় সাপেক্ষ সুতরাং এ বিধিগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে তাড়াহুড়ো করার কোনো সুযোগ নেই।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ টবি আরও বলেন, ‘তবে চিফ প্রসিকিউটর যেভাবে সবকিছু গুছিয়ে এনেছেন এবং নিশ্চিত করেছেন যেন আইন আমাদের সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করে, সেটা দেখার পর আমি আত্মবিশ্বাসী যে, কাজগুলো সঠিকভাবে করা সম্ভব হবে। সামনে ট্রাইব্যুনালে যত দিন কাজ করব তত দিন আইনের বিদ্যমান কাঠামোতে আলোচনা চলতে থাকবে। এ বিষয়ে এবং বিদ্যমান আইনি ফ্রেমওয়ার্কে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে আইন অঙ্গনের অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করব। আশা করি তা করা গেলে আইনি বিষয়গুলো আরও নিরপেক্ষ, সহজতর ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে স্বীকৃত হবার যোগ্য হবে। এ সময় ক্যাডম্যানের সঙ্গে অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ছিলেন।

এদিকে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা মামলায় ছয় পুলিশ সদস্য ও দুই আওয়ামী লীগ নেতাসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে সারা দেশে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অনেক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবং আরেক মামলায় তার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রায় তিনশ অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে। এ অবস্থায় প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর ভারত সরকারকে কূটনৈতিকপত্র (নোট ভারবাল) দেয় বাংলাদেশ সরকার। ভারত এ বিষয়ে কোনো জবাব বাংলাদেশকে দেয়নি। বরং ভারতে হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর খবর এসেছে দেশটির সংবাদমাধ্যমে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ফেরত না পাঠানোর অবস্থানে আছে ভারত সরকার। ঢাকার চিঠির জবাব দিতে দিল্লি কয়েক মাস সময় নিতে পারে, এমন কথাও বলা হয় এসব প্রতিবেদনে।

৬ পুলিশ সদস্য ও দুই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা : জুলাই-আগস্টের গণহত্যা মামলায় ছয় পুলিশ সদস্য ও দুই আওয়ামী লীগ নেতাসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, আজকে আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছয়জন হচ্ছেন পুলিশ। বাকি দুজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সংস্থা সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে। আসামিরা যাতে পালিয়ে না যায় সেজন্য তাদের নাম প্রকাশ করছি না।

তাজুল ইসলাম বলেন, আজকে যাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই ঢাকা শহরের চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এটা নিশ্চিত হওয়ার পরই তদন্ত সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চেয়েছেন। চারটি পিটিশনে আলাদাভাবে মোট আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম