Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ইউএসএইড’র চিঠি

রোহিঙ্গা ছাড়া বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা বন্ধ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রোহিঙ্গা ছাড়া বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা বন্ধ

যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএইড) অর্থায়নে বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্প ও কর্মসূচির ব্যয় অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইউএসএইড জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আর বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে না। তবে জরুরি খাদ্য সহায়তা এবং ইসরাইল ও মিসরের জন্য সামরিক অর্থায়নকে এ সিদ্ধান্তের বাইরে রাখা হয়েছে। রোববার ইউএসএআইডি বাংলাদেশ কার্যালয়ের পরিচালক রিচার্ড অ্যারন সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সব স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠনের জন্য এ নির্দেশনা জারি করে চিঠি দেন। 

‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ : যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তার পুনর্মূল্যায়ন ও পুনঃসামঞ্জস্যকরণ’ শীর্ষক চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ইউএসএআইডি-বাংলাদেশের সব বাস্তবায়ন অংশীদারদের প্রতি একটি নির্দেশিকা হিসাবে পাঠানো হচ্ছে। চিঠিটি ইউএসএআইডি-বাংলাদেশের সব বাস্তবায়ন অংশীদারদের প্রতি একটি নির্দেশিকা হিসাবে পাঠানো হচ্ছে। যাতে আপনার সংশ্লিষ্ট ইউএসএআইডি-বাংলাদেশ চুক্তি, কার্যাদেশ, অনুদান, সমন্বিত চুক্তি বা অন্যান্য অধিগ্রহণ বা সহায়তা সরঞ্জাম অধীনে করা কোনো কাজ অবিলম্বে বন্ধ, থামানো বা স্থগিত করা হয়।’

এতে অংশীদারদের সঙ্গে যেসব কাজ চলছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে ব্যয় সঞ্চয়ের জন্য সব যুক্তিসংগত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে ইউএসএআইডির অর্থায়নে চলমান সব প্রকল্প বন্ধ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য অধস্তনদের নির্দেশ নেওয়া হয়েছে।

৫০ বছরেরও বেশি সময় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন, ২০২২ সালে ৪৭০ মিলিয়ন, ২০২৩ সালে ৪৯০ মিলিয়ন এবং ২০২৪ সালে ৪৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে তারা।

২৪ জানুয়ারি ইসরাইল ও মিসর বাদে সব দেশে সহায়তা তহবিল স্থগিত করে ট্রাম্প প্রশাসন। সহায়তা প্রদান বন্ধ সংক্রান্ত গোপন নথিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, বিদ্যমান বা নতুন সহায়তার বিষয়গুলো পর্যালোচনা এবং অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে অর্থছাড় দেওয়া হবে না। ৮৫ দিনের মধ্যে বিদেশি সহায়তার বিষয়গুলো রিভিউ করা হবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকাই প্রথম’ নীতির অংশ এই উদ্যোগ।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির যুগান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা বন্ধ হলে বাংলাদেশে নানাভাবে এর প্রভাব পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা পাই। ইউএসএআইডি বিভিন্ন প্রকল্পসহ স্বাস্থ্য, কৃষি, জলবায়ু এবং রোহিঙ্গাদের জন্য সহযোগিতা প্রদান করে। তবে এই সহায়তার ক্ষেত্রে খাদ্যদ্রব্য না থাকার কথা বলা আছে। সেক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্যদ্রব্যের সহায়তা হয়তো আমরা পাব। কিন্তু অন্যান্য সাহায্য-সহযোগিতা পাব না। সেখানে অনিশ্চয়তার একটি জায়গা তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের এখন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সহযোগিতা কমে গেলে অন্য যারা সহযোগী আছে, তাদের কাছ থেকে পূরণ করার চেষ্টা করতে হবে।

এ বিষয়ে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে সহায়তার এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবেও তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা দেয়। সেটি বন্ধ হলে চলমান কার্যক্রমে কিছুটা বিঘ্ন ঘটবে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে তারা কী সিদ্ধান্ত নেয় ৮৫ দিনের রিভিউর নিরীক্ষে। 

তিনি বলেন, আমাদের চেষ্টা করা উচিত যুক্তরাষ্ট্র যে সহায়তা দিয়ে থাকে, তা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করে, অর্থনীতিতে অবদান রাখছে সে বিষয়গুলো ভালোভাবে তুলে ধরা। বাংলাদেশ যে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী, তাদের গার্মেন্ট সামগ্রিক বড় অংশ বাংলাদেশ সরবরাহ করে, টিকফা আলাপ-আলোচনার বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে সহয়োগিতা করে। বিষয়গুলোকে একত্রিত করে একটি কেস জোরালোভাবে উপস্থাপন করা। বাংলাদেশে তারা যে সহযোগিতা করে, সেটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ; তা তুলে ধরে দ্বিপাক্ষিকভাবে আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। চুপ করে বসে না থেকে বিষয়গুলোকে জোরালোভাবে দেখতে হবে।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম