জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেদ্রীয় কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, এই যে জুলাইর এত বড় একটি অভ্যুত্থান, এটার একটি লিখিত চুক্তি থাকা উচিত। যারা রক্ত দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন, তাদের একটা স্বীকৃতি থাকতে হবে। সে উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের ডেকেছিলেন। আমরা মনে করি তাদের সমন্বয়ে এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক দলের যারা প্রতিনিধি ছিলেন তারাও তাদের জায়গা থেকে এ বিষয়ে সম্মত হয়েছেন যে অভ্যুত্থানের অবশ্যই একটি ঘোষণাপত্র থাকা উচিত। আমরা বিশ্বাস করি খুব দ্রুততম সময়ে এই ঘোষণাপত্রটি পুরো বাংলাদেশের মানুষের সামনে আসবে। যেখানে বিগত ১৬ বছরে মানুষের ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন; তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে যেভাবে অভ্যুত্থানটি সফল হয়েছে এবং আমরা এই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে যে স্বপ্নগুলো দেখি তার সামগ্রিক একটি রূপরেখা এই ঘোষণাপত্রে দেখতে পাব।

তিনি শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড় এম আর সরকারি কলেজ মাঠে জেলার শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এত বড় একটি অভ্যুত্থান, এত জীবন বিসর্জন; সামগ্রিক সবকিছুর যে চাওয়া তা শুধু একটি নির্বাচনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমরা অবশ্যই মনে করি দ্রুততম সময়ে নির্বাচন হয়ে জনগণের যারা প্রতিনিধি হবেন তাদের কাছে ক্ষমতা যাবে। কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এটা তো এককথায় অবাস্তব এবং অসম্ভব যে ছয় মাসের মধ্যে নতুন একটি ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা, ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করা, বিচার বিভাগ সংস্কার করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের অ্যাকচুয়াল যে ভূমিকা, সেই জায়গায় ফিরিয়ে আনা। এটা অসম্ভব। সেই জায়গায় আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেটি বলেছিল ২৬ এর মাঝামাঝির আগে। খুব অল্প সময় দিয়েছিল। ২৬-এর মাঝামাঝির আগে মানে অভ্যুত্থানের দুই বছর হচ্ছে না। এক বছর ৯ মাসের মতো। আমরা মনে করি সেটা হোক কিংবা এর যদি দুই-চার মাস আগেও তারা মনে করে যৌক্তিক সময়। আমরা আরেকটা শুনলাম যে ২৫-এর ডিসেম্বর বা ২৬-এর জানুয়ারির মধ্যে এটি হবে। সুতরাং যেটি যৌক্তিক মনে হবে আমরা সেটিতে কখনো দ্বিমত করব না। কিন্তু যদি বলা হয় এ বছরের জুন এটা আমাদের কাছে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে পঞ্চগড় জেলাসহ রংপুর বিভাগ অনেক বৈষম্যের শিকার হয়েছে। অন্যায় অনিয়ম ঠেকাতে প্রত্যেক জেলা উপজেলার মানুষকে নিয়ে গ্রুপ তৈরি করা হবে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের যে সুযোগ দিয়েছে সেটি আমানত মনে করি। এই আমানত রেখে মানুষের কল্যাণে যা কিছু করা যায় আমরা করব।

এর আগে তিনি পঞ্চগড় পৌর এলাকার ২ হাজার তালিকাভুক্ত শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি নেতা পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আদম সুফি, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী, অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান খলিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।