ইসির সঙ্গে বৈঠক
নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে চেয়েছে জাতিসংঘ

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
-6786d291d2949.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশনের সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা জানতে চেয়েছে ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন কী ধরনের সহায়তা চায়, এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন তারা। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তারা এসব তথ্য জানতে চান। তাদের এসব প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা তাদের জানিয়েছেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা দিতে যাচ্ছে। নির্বাচনব্যবস্থায় সংস্কারের ওপর নির্ভর করছে সামনে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ আসছে। ওই বৈঠকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আওতায় ইসি যেসব কারিগরি ও অন্যান্য সহায়তা চেয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল ১০ দিনের ঢাকা সফর শুরু করেছে। তারা নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বৈঠক করবে। নিউইয়র্ক থেকে আসা ইউএনডিপির প্রতিনিধি দলটি প্রথমদিনে মঙ্গলবার প্রথমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাছির উদ্দীন, পরে সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। পরে তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান। সফররত ওই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন কমিশনে বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া উইন্ডোর (সময়ের) ভেতর আমরা জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ইউএনডিপির কাছে কমিশনের সহায়তা চাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এ সহায়তার মধ্যে রয়েছে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সংক্রান্ত প্রযুক্তি, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ উপকরণের উন্নয়নের মতো কিছু বিষয়। প্রতিনিধিদলটি এসব প্রয়োজনীয়তা পর্যালোচনা করতেই (বাংলাদেশে) এসেছে। তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, অন্য অংশীজনদের সঙ্গেও কথা বলবেন। এরপর ১০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনের বিষয়ে একটি প্রস্তাব তারা আমাদের সামনে উপস্থাপন করবেন।
অপরদিকে গোয়েন লুইস বলেন, জাতিসংঘ কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন জাতিসংঘকে চিঠি দিয়ে সহায়তা চেয়েছে। ফলে এ ব্যাপারে আমাদের প্রয়োজনীয়তা নিরূপণ করা দরকার। তিনি বলেন, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জাতিসংঘ কী ধরনের কারিগরি সহায়তা দিতে পারে, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কিছু সুপারিশ করবে। সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি ও অপতথ্য মোকাবিলায় সহযোগিতাসহ বিস্তৃত বিষয়ে সহায়তা দিতে পারে ইউএনডিপি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আসলে (মূল্যায়নের) প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি এবং নির্বাচন কমিশনের চাহিদা কী, তা বোঝার চেষ্টা করছি। ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে তারা (ইসি) ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে এবং কমিশন কীভাবে নির্বাচন আয়োজন করতে চায়, তা বোঝার চেষ্টা করছি আমরা।
গোয়েন লুইস বলেন, আইটি সক্ষমতা উন্নয়ন থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজের জন্য কারিগরি সহায়তা চেয়ে অনুরোধ করেছে ইসি। অপতথ্যের বিস্তৃতি রোধেও সহায়তা চেয়েছে তারা। এ ধরনের আরও কী কী প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তা বুঝতে ১০ দিনের মধ্যে মূল্যায়ন শেষ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এরপর নির্বাচন কমিশনের সামনে সেগুলো উপস্থাপন করা হবে।
সূত্র আরও জানায়, ইউএনপির কাছে একটি তালিকা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ওই তালিকায় আগামী সংসদ নির্বাচন এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের সরঞ্জাম সরবরাহের অনুরোধ জানানো হয়েছে। ওই তালিকার বাইরে আর কোনো সহায়তার প্রয়োজন হবে কি না, এ বিষয়ে জানতে চায় প্রতিনিধিদল। জবাবে নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচনে প্রচুর ভুল সংবাদ প্রচারিত হয়। এর প্রতিরোধে সহযোগিতা চান তিনি। আরেকজন কর্মকর্তা জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্যভান্ডারের সুরক্ষায় কারিগরি সহযোগিতার কথা বলেন। আসন্ন নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।