Logo
Logo
×

শেষ পাতা

আগে আওয়ামী লীগের বিচার

ফ্যাসিবাদের পক্ষে লেখা কলম ভেঙে দেব: হাসনাত আবদুল্লাহ

Icon

সিদ্ধিরগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ দক্ষিণ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ফ্যাসিবাদের পক্ষে লেখা কলম ভেঙে দেব: হাসনাত আবদুল্লাহ

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগের প্রশ্নে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আসবে সেটা হলো আগে দলটির বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগের মানবাধিকারের জন্য টকশোজীবী, মিডিয়াপাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ যারা সরব হয়েছেন ফ্যাসিবাদকে তারাই পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব কলম আবার লিখবে আমরা সেসব কলম ভেঙে দেব। মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া শহিদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের (প্রোক্লেমেশন) দাবিতে পথসভা ও গণসংযোগে তিনি এসব কথা বলেন। পরে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড ও সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরে পথসভা ও গণসংযোগ করেন।

হাসনাত আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মিডিয়া কথা বলবে, সেসব মিডিয়ার বিপক্ষে আমাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব ব্যক্তি আবার তাদের চিন্তা প্রকাশ করবে, তাদের বিপক্ষে আমাদের শক্ত অবস্থান থাকবে। আমরা বারবার বলছি-আপনারা যদি তরুণ প্রজন্মের কথা বুঝতে ব্যর্থ হন, তাহলে আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে; পরবর্তীতে যারাই নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আসবেন তাদের পরিণতিও আওয়ামী লীগের মতো হবে। তিনি বলেন, আজকে তরুণ প্রজন্মকে রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছে। আমাদের রক্ত দিতে হয়েছে। ভয়কে আমাদের জয় করতে হয়েছে। কারণ দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির সংস্কৃতি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির সংস্কৃতি আমাদের তরুণদের আশাহত করেছে। আমরা জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র করতে পারিনি। আমরা রাষ্ট্রের মধ্যে নাগরিক হয়ে উঠতে পারিনি। অতীতের রাজনৈতিক কাঠামো আমাদের নাগরিক অধিকার স্তরে স্তরে বঞ্চিত করেছে। তরুণ প্রজন্ম বঞ্চিত হয়েছে। এ বঞ্চনার ক্ষোভ থেকে আমাদের দ্রোহের আগুন দিয়ে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়েছি। পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মিত হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আমাদের আলটিমেটাম ছিল। সরকার আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে-রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র তৈরি করা হবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো-এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখছি না। উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা যাদের উপদেষ্টা বানিয়েছি। আমাদের প্রতিনিধি হয়ে যেসব উপদেষ্টা সরকারে গেছেন, আমরা আপনাদের বলতে চাই-আপনারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনারা যদি মনে করেন জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে রাষ্ট্রীয় কোনো বাধা রয়েছে-সেটি আপনারা জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। আমরা যেভাবে আগস্টে রাস্তায় নেমেছিলাম, ঠিক একইভাবে আমরা আবার রাস্তায় নেমে আসব। এ প্রোক্লেমেশন দিতে আপনাদের বাধা কোথায়? কারা বাধা দিচ্ছেন সেগুলো জনগণের সামনে আপনারা প্রকাশ করুন। যদি আপনারা ব্যর্থ হন, তাহলে উপদেষ্টার কাতার থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসুন। আমরা একসঙ্গে মিলে যেভাবে হাসিনার পতন ঘটিয়েছি, প্রয়োজন হলে আমরা সেভাবে আবার আমাদের প্রোক্লেমেশন আদায় করে নেব।

চিটাগাং রোডের শিমরাইল মোড়ে পথসভায় হাসনাত বলেন, বাংলাদেশ প্রশ্নে আমরা আপসহীন। ভারতের দাদাগিরি আর এ বাংলাদেশ চলবে না। দিল্লি থেকে আর ঢাকার মসনদ নির্ধারিত হবে না। দিল্লি থেকে এ দেশের গণভবনে কে বসবে সেই সিদ্ধান্ত আর আসবে না। পরে বাংলাদেশে যারা শাসন ক্ষমতায় আসবেন তারা দিল্লিমুখী না হয়ে, ভারতমুখী না হয়ে জনতামুখী হোন। যারা দিল্লিমুখী হয়েছিলেন তাদের আমরা মাত্র ৪৫ মিনিটে সীমান্তের ওপারে পাঠিয়েছি। সুতরাং যারা আবার দিল্লিমুখী হচ্ছেন, ভারতমুখী হচ্ছেন আপনারা নিকট অতীত ভুলে যাবেন না। মানুষের কাছে ফিরে আসেন, মানুষের কথা শোনেন আর জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করুন। আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে লড়াইয়ে-সংগ্রামে।

হাসনাত আরও বলেন, আমাদের লড়াই শেষ হয়ে যায়নি, আমাদের শহিদ হওয়ার যাত্রা অব্যাহত থাকবে। আমাদের ওয়াসিম শহিদ হয়েছের, মুগ্ধ শহিদ হয়েছেন, আবু সাঈদ শহিদ হয়েছেন। এরপর হয়তো শহিদের খাতায় আমার অথবা আপনার নাম থাকতে পারে। আমাদের সবার নাম থাকতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ প্রশ্নে যদি আমাদের রক্ত দিতে হয় আমরা পরবর্তীতে আমাদের নাগরিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আবু সাঈদ যেভাবে রক্ত দিয়েছেন আমরাও সেভাবে রক্ত দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

গণসংযোগ ও পথসভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জোনায়েদ, সহ-মুখপাত্র আরেফীন মুহাম্মাদ হিজবুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য শওকত আলী ও তামিম আহমেদসহ কেন্দ্রীয় ও নারায়ণগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নেতারা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম