সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর নামে পৃথক চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তার স্ত্রী, ভাই, ভগিনীপতি ও কেয়ারটেকারসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। সোমবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাগুলো দায়ের করা হয়। মামলার বাদী হয়েছেন সংস্থাটির উপপরিচালক মো. আহসানুর কবীর পলাশ, সহকারী পরিচালক মো. রাকিবুল হায়াত ও উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু। দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

এজাহার অনুযায়ী, এসব মামলায় লিকু ও তার সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ১৪৪ কোটি ৫৯ লাখ ১৩ হাজার ১০ টাকা সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৫৭ লাখ ১২ হাজার ৯৬ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

জানা গেছে, লিকুকে প্রধান আসামি করে দুটি মামলা করা হয়েছে। একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে ৫৫ লাখ ৩২ হাজার ৮৮০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অপর মামলায় তার বিরুদ্ধে ৩৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৪৪ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়। লিকুসহ এই মামলায় ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তার, ভগ্নিপতি শেখ মো. ইকরাম, লিকুর ভাই গাজী মুস্তাফিজুর রহমান (দিপু), ভাগিনা তানভীর আহম্মেদ, ব্যবসায়িক অংশীদার মো. লিয়াকত হোসেন সবুজ ও মো. কালু সেখ, লিকুর বাসার কেয়ারটেকার হামিম শেখ, তার ম্যানেজার মিন্টু রহমান ও মো. আরাফাত হোসেন।

এজাহারে বলা হয়েছে, লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তার তার ৯টি ব্যাংক হিসাবে ১২ কোটি ৭৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৪৬ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেন। একইভাবে শেখ মো. ইকরাম তার ব্যক্তিগত ও যৌথ নামে পরিচালিত ৩টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ২১ কোটি ৫ লাখ ৭৩ হাজার ২৯৭ টাকা, গাজী মুস্তাফিজুর রহমান (দিপু) তার ব্যক্তিগত ও যৌথ নামে পরিচালিত ৪টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ১৯ কোটি ৪৬ লাখ ১১ হাজার ৯৬৩ টাকা লেনদেন করেন। এছাড়া তানভীর আহম্মেদ ১৯ কোটি ৮৮ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫৪ টাকা, মো. লিয়াকত হোসেন (সবুজ) ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৬০ হাজার ২৬৩ টাকা, আসামি মো. কালু সেখ তার ব্যক্তিগত ও যৌথ নামে পরিচালিত ৩টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ৫৬ কোটি ৫২ লাখ ৮৯ হাজার ৬৪৯ ও লিকুর কেয়ারটেকার হামিম শেখ ৪টি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৭ টাকা লেনদেন করেন।

গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৩ কোটি ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৮ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় লিকুকেও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া লিকুর ভগ্নিপতি শেখ মো. ইকরামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্য একটি মামলায় তাকেও আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ইকরামের বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৮ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।