বছরের শুরুতে বই না পেয়ে হতাশ শিক্ষার্থীরা
সব বই পৌঁছাতে মার্চ পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![বছরের শুরুতে বই না পেয়ে হতাশ শিক্ষার্থীরা](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/01/03/Book-677721a037ef6.jpg)
দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নতুন বছরের শুরুতেই বই পায়নি। কোনো কোনো স্কুলে প্রাথমিকের কিছু বই পেলেও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা বই পায়নি। সহপাঠীরা কেউ পেয়েছে আবার কেউ পায়নি। কবে সবাই বই পাবে সেটিও জানে না তারা। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছে বই বিতরণ শুরুই হয়নি। রাজধানীর মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে বই বিতরণ আগামী রোববার থেকে শুরু হবে। যদিও এই স্কুলের প্রথম থেকে তৃতীয় ও দশম শ্রেণির কিছু বই এসেছে। রোববার বই বিতরণ শুরু হলেও সব শিক্ষার্থী বই পাবে না।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বছরের প্রথম দিন থেকে বই বিতরণ শুরু হয়েছে। এতে ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কেউ পাঠ্যবই পায়নি। আবার ৮ম, ৯ম ও ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পেয়েছে কেবল তিনটি করে বই। এছাড়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে বছরের প্রথম দিন থেকে বই বিতরণ শুরু হয়েছে। এতে ৪র্থ ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই পেয়েছে। অন্য শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থী বই পায়নি।
নাফিসা নামে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলে এখনো বই বিতরণ শুরু হয়নি। শুনেছি ৭ম শ্রেণির বই এখনো স্কুলে আসেনি। কবে বই পাব আর কবে পড়াশোনা শুরু করব এই নিয়ে একটু চিন্তিত আছি।
শাহরিয়ার নামে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এখনো বই হাতে পাইনি। কয়েকটি শ্রেণিতে বই দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে আমরা কবে পাবা সেটি নিশ্চিত করে স্কুল থেকে কিছু বলেনি। দুদিন ধরে স্কুলে গিয়ে বই না পেয়ে হতাশা কাজ করছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল হক দুলু বলেন, শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা বই না পেলে এক ধরনের হতাশা কাজ করে। পড়াশোনার আগ্রহ কমে যায়। যেহেতু গত বছর আন্দোলন ও নানা কারণে শিক্ষার্থীরা একটা মানসিক অস্থিরতার মধ্যে আছে, তাই তাদের দ্রুত বই দিয়ে ক্লাসে ফেরাতে হবে।
জানা যায়, নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রায় ৪১ কোটি পাঠ্যবই প্রয়োজন। এর মধ্যে মাত্র ৬ কোটি পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়েছে। এ কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বই পায়নি। স্কুলে গিয়ে কেউ কেউ খুশি হলেও, বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয়েছে হতাশ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, নতুন শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করে পুরোনো শিক্ষাক্রমে ৬৯১টি পাঠ্যবই পরিমার্জন, পাণ্ডুলিপি তৈরি করতে বিলম্ব ও তিন মাস দেরিতে পাঠ্যবই ছাপার কার্যক্রম শুরু করার কারণে সবার হাতে সব বই পৌঁছাতে মার্চ পর্যন্ত লাগতে পারে বলে জানা গেছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পরিকল্পনা ছিল, বছরের প্রথম দিন সব শ্রেণির শিক্ষার্থীর হাতে অন্তত তিনটি করে নতুন বই (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) দিয়ে শিক্ষাবর্ষ শুরু করার। কিন্তু সেটিও সম্ভব হয়নি। সব পাঠ্যবই কবে নাগাদ শিক্ষার্থীদের দেওয়া যাবে, তার প্রতিশ্রুতি দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। একই সঙ্গে বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে পাঠ্যবই পৌঁছাতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।