আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত সরকার নেয়নি: রিজওয়ানা হাসান
নতুন বছরে ৩ অগ্রাধিকার বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনি রোডম্যাপ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
দল হিসাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বুধবার বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, নির্বাচনে কোন দল অংশগ্রহণ করবে আর কোন দল অংশগ্রহণ করবে না-এটাতো আমরা বলে দেব না। যে দল অংশগ্রহণ করতে চায় সে দল করবে। কোন দল কেমন করে অংশগ্রহণ করবে সেটা তো সেই দলকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আওয়ামী লীগের বাধা নেই বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার যে বক্তব্যে দিয়েছেন সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, এসব প্রশ্নের উত্তর আসলে নির্বাচন কমিশন দেবে। তাহলে কি আওয়ামী লীগের নির্বাচনে আসা না আসা সরকারের ওপর নির্ভর করছে না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত সরকার এ বিষয়ে কোনো মতামত জানায়নি। এ ব্যাপারে কোনো অবস্থানও নেয়নি। হাইকোর্টে এ রকম একটি বা দুটি পিটিশন হয়েছিল। সেগুলোর একটি প্রত্যাহার করা হয়েছে, আরেকটি হাইকোর্ট রিজেক্ট করে দিয়েছেন।
শেখ হাসিনাকে ভারতের ফেরত পাঠানো নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, এ ব্যাপারে আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে। সেটিও আমরা বলেছি। সেখানে ব্যতিক্রম আছে সেটিও আমরা বলেছি। তিনি আরও বলেন, ভারত কি অবস্থান নেবে সেটা তাদের ব্যাপার। একটি অবস্থান প্রাথমিকভাবে নেওয়া যায়, আবার চূড়ান্ত অবস্থানের দিকেও যাওয়া যায়। এগুলো ভবিষ্যতের জন্যই আমাদের ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু আমাদের অবস্থান হলো-শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তার বিচার হবে। যদি তার উপস্থিতিতে বিচার না হয় তাহলে যেভাবে বিচার প্রক্রিয়া করতে হয় সেভাবেই করা হবে।
নতুন বছরে সরকার কোন কাজগুলোতে অগ্রাধিকার দেবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নতুন বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার হবে তিনটি। প্রথমত জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড ও বর্বরতার বিচার নিশ্চিত করা; দ্বিতীয়ত যেসব সংস্কার প্রস্তাব আসবে সেগুলোর বিষয়ে রাজনৈতিক মতৈক্য গড়ে সংস্কার করা, আরেকটি হলো নির্বাচনের একটা পরিষ্কার রোডম্যাপ ডেভেলপ করা। তিনি বলেন, এর পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কাজ করবে। অন্তর্বর্তী সরকার প্রাধান্য দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিত্যপণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা নিয়ে।
অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে রিজওয়ান হাসান বলেন, শিক্ষার্থীরা গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র জারির যে কথা বলছেন, এর সঙ্গে সরকারের দ্বিমত নেই। সরকারের পক্ষ থেকে চেয়েছি-এটা বাংলাদেশের জনগণের একটা ঘোষণাপত্র হোক। সেটা করার একটা উপায় হলো, যারা আন্দোলন করেছেন তাদের সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে একটা ঘোষণাপত্র করা। প্রক্রিয়াটি শুরু (শিক্ষার্থীরা) করার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে একটা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সবার সঙ্গে কথা বলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখন আমরা খসড়া তৈরির প্রক্রিয়ায় যাব।
১৫ জানুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থীরা ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়েছেন-এ বিষয়ে রিজওয়ান হাসান বলেন, ১৪ দিনের মধ্যে আমরা বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচকভাবে দেখব। এটা অসম্ভব কোনো কিছু নয়। বিএনপি আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বলেছে সংস্কারের প্রয়োজন আছে। তারা বলেননি যে সংস্কারের প্রয়োজন নেই। রাজনীতিবিদরাও চাচ্ছেন সংস্কারটা হোক। আমাদের তালিকায় নির্বাচনও প্রাধান্য, সংস্কারও প্রাধান্য।