Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ফিরে দেখা ২০২৪

প্রাণ ফিরে পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী

অস্বস্তিতে বছর শুরু হলেও স্বস্তিতে পার

নূরে আলম জিকু

নূরে আলম জিকু

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রাণ ফিরে পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী

নিষিদ্ধের মধ্যেই পুনরুত্থান। অনেকটা যুদ্ধের মাঠে ফিরে পাওয়া প্রাণ। রাজনৈতিক দৃশ্যপটে নতুন মাত্রা। পহেলা আগস্ট তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার দল হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে। এর ঠিক তিনদিন পর ৫ আগস্ট দেশে ঘটে যায় ছাত্র-জনতার বিপ্লব। অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার দলটির নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। বিগত ১৫ বছরে শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি, নেতাকর্মীদের নিপীড়ন-নির্যাতন-মামলায় চাপে থাকা দলটি হয়তো ভাবেনি এভাবে প্রকাশ্যে রাজনীতিতে ফিরতে পারবে। বছরের পর বছর নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা হলেও অভ্যুত্থানের পর বাধাহীন ও রাজনৈতিক প্রাণ ফিরে পেয়েছে জামায়াত-এমন মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাধাহীন সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছে জামায়াতের নীতিনির্ধারকরা। সভা-সমাবেশসহ জনগণের কাছে দলটির ইতিবাচক বার্তাও পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। নেতাকর্মীদের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি। চলছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। অথচ ৫ মাস আগেও প্রেক্ষাপট ছিল সম্পূর্ণ উলটো। অনেকটা আত্মগোপনেই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালাতে হতো দলটির নেতাদের। ছিল নানা ভয় ও আতঙ্ক। অনেক বছর পর ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে প্রকাশ্যে আসে জামায়াতের রাজনীতি।

জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা এটাকে জামায়াতের পুনরুত্থান বলব না। বেআইনিভাবে আমাদের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম, সাংগঠনিক তৎপরতা, দলীয় কাজ, ছোটখাটো সভা-সমাবেশ, বাড়িঘর, অফিস, সবই পতিত স্বৈরাচার নিষিদ্ধ করে রেখেছিল। আমাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল বারবার। কিন্তু আমরা ছিলাম সব সময়ই। যতটা অত্যাচার, নির্যাতন উপেক্ষা করে আমরা পেরেছি মাঠ পর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম, সংগঠন সম্প্রসারণ, আমাদের কর্মীবাহিনী, জনশক্তি নেতাকর্মীদের চরিত্র গঠন, দাওয়াতি কাজ, বিগত ১৫ বছর বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেছি। এখন ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তিত অবস্থায় এখনো তো সেই স্বৈরশাসক নেই। সব দলই অবাধে সভা-সমাবেশ, রাজনৈতিক কর্মসূচি, জনগণের কাছে তার মেসেজ পৌঁছে দেওয়ার স্বাভাবিক একটা পরিবেশ পেয়েছি। জনগণের কাছে আমরা অবাধে যেতে পারছি, মানুষ আমাদের কথা শুনতে পাচ্ছে। আমাদের এতদিনের তৈরি করা জনশক্তি, কর্মী মাঠে ময়দানে কার্যক্রম করছে। কাজ আমাদের সবসময়ই ছিল, এখন হয়তো পরিবেশ বাধাহীন হওয়ার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রমটা সবার কাছে দৃশ্যমান হয়েছে।’

এদিকে অস্বস্তির মধ্য দিয়ে বছর শুরু হলেও স্বস্তিতে বছর পার করছে জামায়াত। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে আওয়ামী সরকার। তখন সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে মিছিল-মিটিং করেছে জামায়াত। বছরের প্রথমদিকে দলটির একাধিক শীর্ষনেতা কারাবরণ করেন। তবে নির্বাচনের শেষে আবার সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দেয় দলটির নেতাকর্মীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন তৎকালীন সরকার বিরোধী অন্য দলগুলোর মতো সমর্থন জানায় জামায়াত। এতে গতি পায় আন্দোলন। প্রেক্ষাপটে ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয় এবং ওইদিনই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের দিন ৫ আগস্টেই দৃশ্যপটে আসে জামায়াত। সেদিন দুপুরে আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বৈঠকে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানও অংশ নেন। ওই দিন সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিভিন্ন দলের বৈঠকেও অংশ নেন জামায়াতের আমির। রাজধানীর মগবাজারে ১৪ বছর ধরে বন্ধ থাকা দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ৫ আগস্ট রাতেই খোলেন শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ নেতারা। পরে তারা পুরানা পল্টনে মহানগর কার্যালয়েও যান। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরদিন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের অবস্থান তুলে ধরা হয়। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে সারা দেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সতর্কবার্তাও দেন জামায়াতের আমির। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী নিরাপত্তার বলয় করেও প্রশংসা কুড়িয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা।

৮ আগস্ট বঙ্গভবনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেয় জামায়াত। ১২ আগস্ট রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে জামায়াতের আমিরসহ প্রতিনিধিদল। পরবর্তী সময়ে বেশ কয়েকবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে দলটির শীর্ষ নেতাদের। ২৮ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে সরকার। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গেও দলটির তৎপরতা লক্ষণীয়। বিভিন্ন সময়ে ঢাকাস্থ দূতাবাসগুলোয় কিংবা জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কূটনীতিকদের বৈঠকও হয়। বিদেশিদের আমন্ত্রণে বেশ কয়েকটি দেশও ভ্রমণ করেন জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব। জাতিসংঘের প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও বৈঠক করেন তারা। এদিকে গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সভা-সমাবেশ ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে তৎপর জামায়াত নেতারা। দেশের বিভিন্ন জেলায় বড় সমাবেশও করতে দেখে গেছে। বিজয় দিবসে রাজধানীতে সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য বিজয় র‌্যালি করে দলটির নেতাকর্মীরা। এতে জামায়াতের আমিরও অংশ নেন।

এদিকে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। পাঁচ আগস্ট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভেদাভেদ ভুলে বেশ কয়েকটি ইসলামী দলের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেছেন জামায়াতের শীর্ষ নেতারা। ইসলামী দলের বাইরেও কয়েকটি দল ও জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে জামায়াত নেতাদের অংশ নিতে দেখা গেছে।

চলছে সাংগঠনিক তৎপরতা : দলীয় সূত্র জানায়, গণ-অভ্যুত্থানের এক মাস পর ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশন হয়। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, সিলেট, রংপুর ও চট্টগ্রাম মহানগরীসহ এ পর্যন্ত প্রায় ৬০টি জেলা সফর করেন। এই সময়ে সারা দেশে ২০২৫-২৬ কার্যকালের জন্য জামায়াতের মহানগরী ও জেলাগুলোতে ইমারত নির্বাচন শেষ করে। জুলাই-আগস্টে হতাহত কিংবা তাদের পরিবারের পাশেও দাঁড়ায় জামায়াত। দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে এই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্বদ্যিালয়ে প্রকাশ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতেও দেখা যায়।

আগামী নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়াটাকেই চ্যালেঞ্জ মনে করি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু থেকেই অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাকে ডিস্টার্ব করার জন্য, একটা সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারের যে অভিযাত্রা সেটাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দেশি-বিদেশি অনেক চক্র একটার পর একটা পরিস্থিতি তৈরি করছে। পালটা ক্যু, জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার-কাণ্ড, সিভিল সোসাইটি ও সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেনের অরাজকতা তৈরি করা। বিভিন্ন দাবি নিয়ে প্রশাসন ও সরকারকে বেকায়দার ফেলা ও হিন্দু সম্প্রদায়কে উসকে দিয়ে দেশের বাইরে একটা নতুন পরিস্থিতি তৈরি করা-এগুলোর কারণে সরকারের তো রোডম্যাপ, সংস্কার, নির্বাচনি দিনক্ষণ ঘোষণা বিলম্বিত হলো। এখন সামনের দিনগুলোতে নির্বাচনের যে আইডিয়া তার (অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান) সে পর্যন্ত পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এসব বাধা, চ্যালেঞ্জগুলো কতটা মোকাবিলা করতে পারবেন? জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন কতটা অবাধ, নিরপেক্ষ করতে পারবেন এটাই বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশনসহ সিভিল প্রশাসন, পুলিশ, জুডিশিয়ারি এসব সংস্কার দ্রুততম সময়ের মধ্যে করে, অন্তত একটা নির্বাচন দিতে যতটুকু সংস্কার লাগে এগুলোই মনে হয় চ্যালেঞ্জ। আমরা এখনো আশাবাদী, সরকারের প্রতি আস্থা রাখি এবং আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। যাতে তারা আগামী নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করতে পারে।’

তিনশ আসনে প্রার্থী : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০ আসনেই প্রার্থী নির্ধারণের কাজ করছে দলটি। অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিলে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের রোডম্যাপের তাগিদও দিচ্ছেন নেতারা। তিনশ আসনে জামায়াতের প্রার্থী প্রসঙ্গে সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী চূড়ান্ত না, প্রার্থী প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া চলমান। নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে আমাদের এই প্রক্রিয়া ততটা পরিণত রূপলাভ করবে। আমরা চূড়ান্ত করিনি, কিন্তু প্রার্থী আমাদের আছে। যাচাই-বাছাই ও জরিপ করছি, এ প্রক্রিয়াটা চলছে।’

জোট গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা তো আছেই। আমাদের ইসলামিক দলগুলোর মধ্যে জোট হতে পারে। আবার অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে মাঠে ছিল, দেশ ও জাতির স্বার্থে তাদের সঙ্গেও ঐক্যের পরিবেশ হলে আমরা সেখানে ঐক্যবদ্ধ হতে রাজি। আমরা ঐক্যের প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী। জাতীয় ঐক্য এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতেই কেবল বিশেষ করে আগস্টের চেতনা ধারণ করে এটা করা সম্ভব। যারাই ঐক্য করতে আগ্রহী হবে তাদের সঙ্গে ঐক্য করতে আমাদের দ্বিধা নেই।’

আলোচনায় অন্যান্য ইসলামী দল, জোট গঠনের চেষ্টা : পটপরিবর্তনের পর আলোচনায় আসে অন্য ইসলামিক দলগুলোও। যাদের লক্ষ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এজন্য দলগুলো নির্বাচনি জোট গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও ইসলামী দলগুলোর মধ্যে আদর্শগত অমিল থাকায় সেই জোট গঠনে সফল হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান সংশ্লিষ্ট দলগুলো।

এদিকে ফ্যাসিবাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি ইসলামিক দলও অংশ নেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের নানা প্রলোভন, অত্যাচার-নিপীড়নের মধ্যেও এসব দল গেল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় সাধারণ জনগণসহ বিএনপি ও জামায়াতের কাছে এসব দলের কদর বেড়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি দল বিভিন্ন জোটের সঙ্গে মিলে বিএনপির ডাকা যুগপৎ আন্দোলনেও সরব ছিল। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জোটে ভেড়াতে এসব দল ফের আলোচনায় উঠে আসছে। কেউ কেউ এও মনে করেন, ইসলামিক দলগুলোকে জোটে ভেড়াতে সক্ষম হলে ভোটের মাঠের সমীকরণ অনেকটা সহজ হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তথ্যমতে, বছরের শুরুতে নানা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের। নির্বাচন বয়কটসহ সরকার পতনের দাবিতে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি বড় সমাবেশও করেছে দলটি। এসব সমাবেশ থেকে সরকার পতনের ডাক দেওয়া হয়।

আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি তো সারা বছরই থাকে। তারপরও আমরা নতুন করে প্রার্থী সিলেকশনের কাজ করছি। আশা করি, সেটা দ্রুত করে ফেলব। সারা দেশে জেলা কমিটিগুলো পুনর্গঠন হলে আমাদের নতুন নেতৃত্ব আসবে। তারপর নতুন কর্মসূচির দিকে যাব। এখন যেহেতু আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচি নেই, সেজন্য শুধু জনমত গঠন করা, মানুষের সামনে দলের বার্তা পৌঁছে দেওয়া। আমাদের নেতাকর্মীরা যাতে ঐক্যবদ্ধ থাকে। সেজন্য জনমত গঠন করাই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’

জোট গঠনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা আগে থেকেই আমাদের একটা সিদ্ধান্ত আছে। আমরা এবার এককভাবে নির্বাচন করব না। আমরা সব ইসলামী সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবেই নির্বাচন যাতে করা যায় সেজন্য চেষ্টা চালাব। বিশেষ করে আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাব। যাতে কমপক্ষে অভিন্ন প্রার্থী প্রতি আসনে রাখা যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এবারও ৩০০ আসনে প্রার্থী আছে। তারপরেও যেহেতু অন্যান্য ইসলামী দলের সঙ্গে আমরা নির্বাচনি জোটের চিন্তা আছে, সেক্ষেত্রে যে যে আসনে ভালো অবস্থায় থাকবে সেখানে আমরা তাকে ছাড় দেব।’

জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠনের প্রসঙ্গে মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, জামায়াতের সঙ্গে জোট না হলে ভোটের মাঠে এটা তেমন কোনো ফলপ্রসূ হবে না। ইসলামী সংগঠনগুলোকে সাধারণ মানুষ আলাদা করে দেখে না। আমাদের মধ্যে হয়তো বিভিন্ন মতবিরোধ আছে, কিন্তু সাধারণ মানুষ যারা তারা ইসলামী সংগঠনগুলোকে এক জায়গায় দেখতে চায়। বিশেষ করে ভোটের মাঠে। সেক্ষেত্রে জামায়াতের মতো একটা বড় শক্তি, তারা যদি আলাদা থাকে, তাহলে তো ঐক্য কোনো ফলপ্রসূ হবে না। এজন্য এটা নিয়ে আমাদের ভাবনা আছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম