শাহবাজের প্রতি ড. ইউনূস
একাত্তরের অমীমাংসিত সমস্যা মীমাংসা করুন
বাসস
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে আহ্বান জানিয়েছেন।
ড. ইউনূস বলেন, ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত সমস্যাগুলো বারবার আসছে। আসুন আমরা সামনে এগিয়ে যেতে সেই বিষয়গুলোর ফয়সালা করি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিষয়গুলো চিরতরে সুরাহা করে ফেলা ভালো হবে।
জবাবে শরিফ বলেন, ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত বিষয়গুলো মীমাংসা করেছে। যদি আরও অমীমাংসিত সমস্যা থাকে, তবে সেগুলো মীমাংসা করা হবে।
বৃহস্পতিবার ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে মিসরের রাজধানী কায়রোর একটি হোটেলে বৈঠককালে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদের বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে সম্মত হয়। চিনি শিল্প ও ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার মতো নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন দুই নেতা। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত বৈদেশিক নীতির মূল বৈশিষ্ট্য সার্কের পুনরুজ্জীবনসহ পারস্পরিক স্বার্থসম্পর্কিত বিষয় নিয়েও তারা আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, আমি সার্কের ধারণার একজন বড় অনুরাগী। ইস্যুটি নিয়ে কথা বলেই যাব। সার্ক নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন চাই। যদিও তা কেবল একটি ফটোসেশনের জন্যও হয়। এটি একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করবে। ২০২৬ সালের মধ্যভাগের আগে দেশে ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার’ এবং সাধারণ নির্বাচন করতে ড. ইউনূস তার সরকারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সংস্কারের বিষয়ে সংলাপের জন্য তিনি একটি ঐকমত্য গঠন কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শরিফকে তার সমর্থনের জন্য অধ্যাপক ইউনূস ধন্যবাদ জানান এবং আশা করেন পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা সত্যিই আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার অপেক্ষায় রয়েছি। সার্ক পুনরুজ্জীবনে অধ্যাপক ইউনূসের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং আঞ্চলিক সংস্থার শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করার জন্য বাংলাদেশকে তিনি ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালিত চিনিকলগুলোকে আরও ভালোভাবে পরিচালনার জন্য তিনি প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাব দেন।
বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের কারণে মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তিনি বলেন, ঢাকা এ রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হতে পারে। তিনি বলেন, প্রায় এক দশক আগে পাঞ্জাবে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইকে বিশ্বমানের বলে প্রশংসিত হয়েছিল। বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আমরা বাংলাদেশে প্রতিনিধি দল পাঠাতে পারি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।