টি ২০ সিরিজ
ছয় বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় বাংলাদেশের
জ্যোতির্ময় মন্ডল, সেন্ট ভিনসেন্ট থেকে
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ওবেদ ম্যাককাওয়ের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন জাকের আলী। আর্নোস ভ্যালের গ্যালারি যেন লাফিয়ে উঠল। স্থানীয় হিরো উইকেট নেবেন আর দর্শকরা বসে থাকবেন, তা হয় না কি। বাংলাদেশের ব্যাটিং তখন সংকটাপন্ন! আবার ঠিক এই ম্যাককাওকে একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রেখে আকিল হোসেনকে যখন ফেরান তাসকিন আহমেদ, তখন গ্যালারিতে কোনো আওয়াজ নেই। ম্যাককাওয়ের মতোই থমকে গেছে। তার আগেই গ্যালারি খালি হতে শুরু করেছে। সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নোস ভ্যালে স্টেডিয়ামে শামীম হোসেনের আরেকটি ক্যামিওতে বাংলাদেশ কোনোমতে ১২৯ রান করে। একই মাঠ, একই উইকেট, শুধু আগের ম্যাচের চেয়ে রানটাই কম। তবে ফল একই। স্বাগতিকদের ১০২ রানে গুঁড়িয়ে ২৭ রানের স্মরণীয় জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে টি ২০ সিরিজ নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ।
২০১৮ সালের পর টি ২০তে এই প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। দেশের বাইরে ২০২২ সালের পর প্রথমবার টি ২০ সিরিজ জয়। ২১ ম্যাচে প্রথমবারের মতো ম্যাচসেরার পুরস্কারও জিতে নিলেন শামীম হোসেন।
নিজেদের প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডেতে দারুণ ব্যাটিংয়ের পরও বোলাররা দায়িত্ব নিতে পারেননি। তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর হতাশা নিয়ে সেন্ট ভিনসেন্টে পা রেখেছিল দল। নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত নেই ইনজুরির কারণে, দলের অন্যতম দুই ভরসা তাওহিদ হৃদয় ও মোস্তাফিজুর রহমানও এই সিরিজে নেই। অথচ, সাফল্যের অঙ্কে নিজেদের অন্যতম প্রিয় মাঠে নেমেই টি ২০ ফরম্যাটে দুর্বার বাংলাদেশ। কম পুঁজি নিয়েও সেই বোলাররাই ম্যাচের ফল এনে দিচ্ছেন। দলের অন্যতম তিন ক্রিকেটার না থাকার পরও তাদের অভাব টের পাচ্ছে না দল।
দ্বিতীয় টি ২০তে গ্যালারি খুব বেশি ফাঁকা ছিল না। উৎসবে আমেজে তাদের প্রধানমন্ত্রী পার্টি গ্যালারি থেকে শুরু করে সাধারণ গ্যালারিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন। প্রথম ম্যাচের মতো টস-ভাগ্য ছিল রভম্যান পাওয়েলের। তবে ভুল করলেন বোলিং নিয়ে। ক্যারিবীয় অধিনায়কের প্রত্যাশা ছিল ভালো উইকেটে বাংলাদেশকে কম রানে আটকে রাখতে পারলে সহজে রান তাড়া করা যাবে। বোলিংটা স্বাগতিকদের ধারালো দেখিয়েছে বটে। বাংলাদেশের বোলারদের সামনে চ্যালেঞ্জটা নিতে পারেননি পাওয়েলরা। প্রথম ম্যাচের মতো এবারও তাদের মাত্র তিন ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছেন। বিশেষ করে ৪২ রানে সাত উইকেট হারানোর পরও রোস্টন চেজ ও আকিল হোসেন ৪৭ রানের জুটি গড়ে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন। সেটা আর হয়নি। পরপর দুই বলে দুটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন রিশাদ হোসেন। রোস্টন সর্বোচ্চ ৩২ এবং আকিল ৩১ রান করেন। তবে শুরুতে তাসকিন আহমেদের নিজের প্রথম ওভারে দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচের চিত্র বদলে দেন। শেষ উইকেট নিয়ে ম্যাচের শেষটাও করেন তিনি। ১৬ রানে নেন তিন উইকেট। দুটি করে উইকেট পান মেহেদী হাসান, তানজিম হাসান সাকিব ও রিশাদ হোসেন। একটি উইকেট পান হাসান মাহমুদ। তার আগে বাংলাদেশের দিশাহীন ব্যাটিংয়ে হাল ধরেন প্রথম ম্যাচে সুযোগ না পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ (২৬)। জাকের আলী আবারও থিতু হয়ে ২১ রানে থামেন। এরপর শামীম হোসেনের ১৭ বলে অপরাজিত ৩৫ রানে বাংলাদেশ ১২৯ রানে পৌঁছে।
(স্কোর কার্ড খেলার পাতায়)