Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ চান শিক্ষার্থী-ছাত্র নেতারা

ডাকসুর কোনো বিকল্প নেই-সাদিক কায়েম * খুব তাড়াতাড়ি বা খুব দেরিতে হলে ক্যাম্পাসের সমতা বিঘ্নিত করবে-গণেশ চন্দ্র

Icon

মাহাদী হাসান, ঢাবি

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ চান শিক্ষার্থী-ছাত্র নেতারা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। এ ঘোষণার পরই নির্বাচন নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। শিক্ষার্থী ও ছাত্র নেতাদের বড় একটা অংশ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালের মার্চে। ওই সংসদের মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের মার্চে। এরপর দীর্ঘ ৪ বছর ধরে বন্ধ নির্বাচন। বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে আবার ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি ওঠে। এরই মধ্যে রোববার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারিতে ডাকসু নির্বাচন হতে পারে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন ঘোষণার পর শিক্ষার্থী ও ছাত্র নেতাদের বড় একটা অংশ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, ডাকসু নির্বাচন এবং ছাত্র রাজনীতি নিয়ে অধ্যাপক মতিন উদ্দীনের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি কয়েকবার বসেছে এবং অতি দ্রুত এটি তাদের মতামত জানাবেন। উনাদের কাছ থেকে এ মাসের মধ্যেই একটা পরামর্শ পাব। আশা করি এরপরই সবকিছু পরিষ্কার হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় নির্বাচনের সময় নিয়ে তাড়াহুড়ো করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতি এখনও জুলাই-আগস্টের উত্থানের আঘাত থেকে বের হতে পারেনি। খুব তাড়াতাড়ি বা খুব দেরিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা ক্যাম্পাসের সমতা বিঘ্নিত করবে। একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ প্রয়োজন, যাতে একটি ইতিবাচক এবং উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাবি শিক্ষার্থী আবু বাকের মজুমদার বলেন, ছাত্র সমাজের লিগ্যাল প্রতিনিধি হওয়ার জন্য ডাকসু নির্বাচনের প্রয়োজন অবশ্যই আছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈধ প্রতিনিধি নির্বাচন অবশ্যই হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি, আর সেটা হবে অবশ্যই ডাকসুর মধ্য দিয়ে। শুধু ডাকসু নয় সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চালু হলে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টটিউটের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান শুভ যুগান্তরকে বলেন, বিগত বছরগুলোতে আমরা দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন দিতে সব সময় অনীহা প্রকাশ করে আসছে। কারণ ডাকসু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা কমে যাবে। পাশাপাশি নিয়মিত শিক্ষার্থীরা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি পাবে যাদের কাছে তাদের সব প্রয়োজন জানাতে পারবে। বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার যে সময়ের আশ্বাস দিয়েতে তা ইতিবাচক এবং সব নিয়মিত শিক্ষার্থীদের চাওয়ার প্রতিফলন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের জন্য দ্রুত রোড ম্যাপ চাই।

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম যুগান্তরকে বলেন, ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু রাজনীতির আবহ সৃষ্টি করতে গণতান্ত্রিক উপায়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন ডাকসুর কোনো বিকল্প নেই। ডাকসু নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অবশ্যই একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। আর এটি অবশ্যই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর যুগান্তরকে বলেন, বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই যে, সরকারের নির্দেশনা ছাড়া ডাকসু নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র সংস্কারের একটি জোর দাবি উঠেছে। আর সেখানে ছাত্র রাজনীতির সংস্কার প্রয়োজনীয় বিষয় হয়ে গেছে। ডাকসুসহ ছাত্র সংসদ নির্বাচন ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগনগুলোর মধ্যে সহাবস্থান নিশ্চিত করবে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম