Logo
Logo
×

শেষ পাতা

নাগরিক উৎসবে ড. সাখাওয়াত

পতিত সরকার ও বন্ধুরাষ্ট্র অস্থিরতা তৈরি করছে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পতিত সরকার ও বন্ধুরাষ্ট্র অস্থিরতা তৈরি করছে

ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শিল্প খাতে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে এই অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছে। পতিত সরকার ও তাদের বন্ধুরাষ্ট্র জড়িত হয়ে কিছু অস্থিরতা তৈরি করছে। কিছু সমস্যা শ্রমিকরা না বুঝে করছেন। বুধবার ভোটার সচেতনতা ও নাগরিক সক্রিয়তা কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত ‘নাগরিক উৎসবে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওই অনুষ্ঠানের সভাপতি দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ থেকেই সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গণতন্ত্র বিকাশের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা রক্ষায় জনগণকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে।

দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) যৌথভাবে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মিলনায়তনে এই উৎসবের আয়োজন করে। নাগরিক উৎসবে দেশের ৩০টি জেলায় প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত মাঠপর্যায়ের প্রতিনিধি, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। দিনব্যাপী এই প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরা, উন্মুক্ত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এছাড়া অলিম্পিয়াডে বিজয়ী ১১ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। নাগরিক উৎসবটি সঞ্চালনা করেন প্রকল্প ম্যানেজার দিলীপ কুমার সরকার।

অনুষ্ঠানে পোশাক খাতের অস্থিরতা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শ্রমিকেরা সমস্যা তৈরি করছেন না। তাদের দিয়ে সমস্যা তৈরি করানো হচ্ছে। এটি দুর্ভাগ্যজনক। যারা দেশের বাইরে থেকে অস্থিরতা তৈরির ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত চারটি জাতীয় নির্বাচন দেশে-বিদেশে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের সর্বশেষ তিনটি নির্বাচনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কীভাবে নির্বাচনকে নষ্ট করতে হয়, তা নিয়ে পিএইচডি করতে দেশের বাইরে যেতে হবে না। এই নির্বাচন ছিল গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক। আমি আগেই বলেছিলাম, ওই নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন তাদের আম-ছালা দুই-ই যাবে। যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের পরিণতি ইতোমধ্যে দেখা গেছে। রাষ্ট্রের প্রতিটি কাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে ভোট ছিল একটি উৎসব। কিন্তু গত ১৫ বছর মানুষ ভোট দিতে পারেনি। নির্বাচন তখনই গ্রহণযোগ্য হয়, যখন তা অংশগ্রহণমূলক হয়। অংশগ্রহণ মানে শুধু রাজনৈতিক দল নয়, ভোটারদেরও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকতে হয়। তিনি আশা করেন, আগামী নির্বাচন যখনই হোক, তা একটি ব্যতিক্রমী নির্বাচন হবে। তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে যে নির্বাচন হবে, তাতে যারা অংশ নেবেন, তারা নিশ্চয় গত তিনটি নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। যদি শিক্ষা না নেন, তাহলে তা দুর্ভাগ্যজনক। যাতে কারও ভোট ছিনতাই না হয়ে যায়, সেজন্য নাগরিকদের ভোটাধিকার নিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

সুজনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিচারপতি এমএ মতিন বলেন, মানুষের মধ্যে অধিকার সচেতনতা জাগিয়ে তুলতে হবে। মানুষের কিছু জন্মগত অধিকার রয়েছে। গণতন্ত্রের চেতনা জাগ্রত থাকলে শাসনতন্ত্র ও আইনের প্রয়োজন হয় না। আর সেই চেতনা মরে গেলে শাসনতন্ত্র ও আইন দিয়েও তা জাগানো যাবে না। তিনি বলেন, মানুষ এখন স্বাধীনতার যে স্বাদ পাচ্ছে, তা ধরে রাখার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

সুজন সম্পাদক ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সবার দায় আছে। এ ক্ষেত্রে দায় বেশি রাজনীতিবিদদের। তারা যেসব অঙ্গীকার করেছিলেন, সেগুলো বাস্তবায়ন করেননি। বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলেছিলেন, দেশ বাজিকরের হাতে। তিনি বলেন, এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কার প্রয়োজন। এটি চাপিয়ে দিলে হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ থেকেই সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। তবে নাগরিকরা সোচ্চার না হলে কোনো কিছুই সফল হবে না। এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন সবাই চায় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসুক। তিনি বলেন মানুষ আশা করছেন, ১৭ ডিসেম্বর আদালতের রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসবে। এটা যাতে আর কখনো বাতিল না হয়, সেজন্য সবাইকে ‘ওয়াচ ডগের ভূমিকা’ পালন করতে হবে।

মুনিরা খান বলেন, দেশের গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু হওয়া অত্যন্ত জরুরি। জনগণ নির্বাচন নিয়ে সচেতন হলে, সোচ্চার হলে সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হয় না। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হলে গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে যে পরিবর্তন এসেছে তা ধরে রাখতে তরুণদের আরও সজাগ থাকতে হবে। অর্থ, পেশিশক্তি এবং নেতিবাচক প্রভাব থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে গণতন্ত্রের পথে আমাদের সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম