Logo
Logo
×

শেষ পাতা

উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে শীত, কষ্টে শ্রমজীবী মানুষ

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে শীত, কষ্টে শ্রমজীবী মানুষ

রাজশাহী, রংপুর ও পঞ্চগড়সহ দেশের উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে শীত। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় জবুথবু হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। বৈরী আবহাওয়ার কারণে শ্রমজীবী মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। নগরীর ফুটপাতে শীতবস্ত্রহীন ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট বেড়েছে। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে সড়ক-মহাসড়কে। সোমবার দিনের প্রথম ভাগে রাজশাহীর শাহমখদুম বিমানবন্দরে কোনো ফ্লাইট ওঠানামা করেনি। দৃশ্যমানতা কমে আসায় নদী অঞ্চলে নৌকা চলাচলও বন্ধ রয়েছে। বেড়েছে সর্দি-কাশিসহ শীতজনিত নানা রোগ। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সামনে শীত আরও বাড়তে পারে।

রংপুর : সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, ঘন কুয়াশায়ও সকাল থেকে কর্মব্যস্ত বিভিন্ন শ্রমজীবী মানুষ। বাড়ির সামনে আগুন জ্বালিয়ে শিশু, বৃদ্ধ ও নারীরা শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। নগরীর মডার্ন মোড়ে কথা হয় রিকশাচালক ইউনুস আলী ও রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তারা জানান, দুই-তিন দিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। কুয়াশাও পড়ছে অনেক। এতে যাত্রী নেই বললেই চলে। শীতের কারণে তারাও ঠিকভাবে রিকশা চালাতে পারেন না। ফলে উপার্জন কমে গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে সংকটের মধ্যে আছেন।

পীরগঞ্জের জামতলা বাজারের ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক মো. আলী হোসেন বলেন, আমাদের মতো রিকশাচালকদের জন্য শীত অনেক কষ্টের। দিনে শীত কিছুটা কম থাকলেও সন্ধ্যার পর জেঁকে বসে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বাড়তে থাকে।

লালমনিরহাটের বড়বাড়ি উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের ভ্যানচালক সাইদুল মিয়া জানান, কষ্ট হলেও জীবিকার তাগিদে ভোরেই ভ্যান নিয়ে বের হতে হয়েছে।

লালমনিরহাট সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আব্দুল মোকাদ্দেম জানান, হাসপাতালে কয়েক দিন ধরে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি তাদের সেবা দিতে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে ঠান্ডার দাপট আরও বাড়তে পারে।

রাজশাহী : রোববার রাত ১২টার পর থেকেই রাজশাহীসহ আশপাশের অঞ্চল ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত হয়ে যায়। সোমবার থেকে নামে কনকনে ঠান্ডা। আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, ভোর ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, ঘন কুয়াশায় সর্বত্র দৃশ্যমানতা হ্রাস পেয়েছে। আগামী কয়েক দিন রাজশাহী অঞ্চলের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। সড়ক-মহাসড়কে হেডলাইট ও ফগলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে ট্রেনগুলো যথারীতি গন্তব্যে ছেড়ে গেলেও তীব্র শীতের কারণে যাত্রীসংখ্যা কমেছে। রাত্রিকালীন দূরপাল্লার যানবাহনগুলো নির্ধারিত সময়ের পরে গন্তব্যে পৌঁছায় কুয়াশার কারণে। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে যানজটের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ঘন কুয়াশায় ফসলের ক্ষতি হবে কিনা-জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা জানান, মাঠে মাঠে আলু বীজ রোপণের কাজ করছে চাষিরা। এক দুদিনের কুয়াশায় তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে এটা দীর্ঘায়িত হলে আলু বীজ অঙ্কুরোদগম হতে বিলম্ব হবে।

পঞ্চগড় : সোমবাব সারা দিনই পঞ্চগড়ে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ঘন কুয়াশায় ঢেকে ছিল আকাশ। কনকনে ঠান্ডায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে তারা সীমাহীন কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে তেঁতুলিয়ার মহানন্দা নদীতে তীব্র ঠান্ডার মধ্যে পাথর উত্তোলনে জড়িত ২০ হাজার পাথর শ্রমিক অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম