Logo
Logo
×

শেষ পাতা

চারদিক থেকে অবরুদ্ধ পাক সেনারা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চারদিক থেকে অবরুদ্ধ পাক সেনারা

১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাঙালি বুঝে নেয় তাদের হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন আর বেশি দূরে নয়। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ হাতছানি দিয়ে ডাকছে তাদের। এ মাসের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসতে থাকে শত্রুমুক্ত করার খবর। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী বীরদর্পে দেশের নানা জায়গায় বিজয় কেতন উড়িয়ে ঢাকা দখলের জন্য এগিয়ে আসছে। পাকিস্তানি সেনারা চারদিক থেকে অবরুদ্ধ। তারা যুদ্ধের মাঠে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে। পাক সৈন্যদের মনোবলও ভেঙে পড়ে। পালাবার পথ না পেয়ে তখন নানা ধরনের ফন্দিফিকিরে ব্যস্ত পাকিস্তানিরা।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ছিল শুক্রবার। এদিন খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছে দায়িত্ব পালন করছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমীন। পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণের মুখে মৃত্যুকে তোয়াক্কা না করে প্রতিরোধ গড়ে তিনি শহিদ হন। বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধা এবং মিত্র বাহিনী কয়েক দিন ধরে সম্মিলিতভাবে যুদ্ধ চালায়। এদিন মিত্রবাহিনীর জঙ্গি বিমানগুলো ঢাকা বেতার কেন্দ্রের ওপর আক্রমণ করে এবং কুর্মিটোলার ওপর বারবার রকেট হামলা করে। মিত্রবাহিনীর বিমান আক্রমণে চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর অচল হয়ে পড়ে। কয়েকটি জাহাজ ভর্তি পাকিস্তানি বাহিনী বঙ্গোপসাগর দিয়ে পালানোর সময় ধরা পড়ে। একটি জাহাজে নিরপেক্ষ দেশের পতাকা উড়িয়ে পাকিস্তানি বাহিনী সিঙ্গাপুর পালানোর পথে মিত্র নৌবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে।

যুদ্ধে পরাজয়ের আশঙ্কায় লে. জেনারেল নিয়াজী পালাবার পাঁয়তারা করে। তার এই গোপন অভিসন্ধি বিবিসি ফাঁস করে দেয়। নিয়াজী স্বীয় দুর্বলতা ঢাকার জন্য আজ ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে দম্ভভরে বলেন, কোথায় বিদেশি সাংবাদিকরা, আমি তাদের জানাতে চাই, আমি কখনো আমার সেনাবাহিনীকে ছেড়ে যাব না।

জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আগা শাহী উথান্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি ব্যক্ত করেন। চীনের অস্থায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিপো ফেই বলেন, ভারতের কার্যকলাপে তার সম্প্রসারণবাদী নগ্নরূপ প্রকাশ হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, সমাজতন্ত্রী সাম্রাজ্যবাদীরা নির্লজ্জের মতো ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের ত্রাণকর্তার ভূমিকা গ্রহণ করে বর্বরোচিত কাজ করেছে।

সম্মিলিত বাহিনী উত্তরাঞ্চলের যুদ্ধে সর্বাত্মক সাফল্য অর্জন করেছে। মিত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে দিনাজপুর, রংপুর ও সৈয়দপুরের শত্রুবাহিনীকে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। যৌথবাহিনী এই তিন শহর ছাড়া রংপুর ও দিনাজপুর জেলা সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত করে। রাতে পাকবাহিনী জামালপুর গ্যারিসন ছেড়ে ঢাকার দিকে পালাবার সময় শহরের অদূরে যৌথবাহিনীর মুখোমুখি হয়। এই যুদ্ধে প্রায় ১৫০০ পাকসেনা হতাহত হয়। বাকিরা আত্মসমর্পণ করে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম