দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্র্রতি অশান্তি সৃষ্টির পটভূমিতে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলকে কেন্দ্র করে সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। এ আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি ভার্চুয়াল মিটিং করেছে। মিটিংয়ে অংশ নিয়ে ঢাবি উপাচার্য যে কোনো পরিস্থিতিতে ছাত্র সংগঠনের নেতাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

রাত সাড়ে ১০টায় জরুরি ভার্চুয়াল মিটিং শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী মিটিংয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ, প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রভোস্ট ড. আব্দল্লুাহ-আল-মামুন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ প্রমুখ অংশ নেন। ছাত্র সংগঠনের নেতাদের মধ্যে ছাত্রদলের ঢাবি সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, শিবিরের ঢাবি সভাপতি আবু সাদিক কায়েম, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর ঢাবি সভাপতি নুজিয়া হাসিন রাশা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি সভাপতি মেঘমল্লার বসু প্রমুখ অংশ নেন। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারও সভায় উপস্থিত ছিলেন।

জগন্নাথ হলে মুসলিম শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্য ধর্মের শিক্ষার্থীরা বসবাস করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, শনিবার রাতের জরুরি ভার্চুয়াল মিটিংয়ে মূলত নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গোয়েন্দা রিপোর্টে জানানো হয়েছে-একটি গোষ্ঠী দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে বলা হয়েছে এবং সবার মতামত নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে শিবিরের ঢাবি সভাপতি আবু সাদিক কায়েম যুগান্তরকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনলাইন মিটিংয়ে বসেছিল ঢাবি প্রশাসন। সেখানে শিবিরের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো প্রোপাগান্ডা চিহ্নিত করে ফ্যাক্ট চেক করা, প্রোপাগান্ডা রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া ওয়ার্ল্ড রিলিজন অ্যান্ড কালচার বিভাগ থেকে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সপ্তাহ’ ঘোষণা, আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক জোরদার করা ও মসজিদগুলোর ইমামদের খুতবায় সাম্প্রদায়িক সম্প্র্রীতি নিয়ে কথা বলার বিষয়ে প্রস্তাব ওঠে।

ছাত্রদলের ঢাবি সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ইসকনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টের একটা চেষ্টা চলেছে। এক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি কীভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি আমরা। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো প্রয়োজনে আমরা সহযোগিতা করতে রাজি আছি।