Logo
Logo
×

শেষ পাতা

পোশাক শিল্প খাত নিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ে বৈঠক

শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়নি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়নি

তৈরি পোশাক শিল্পের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত বছরে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয় পোশাক শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তবে তৈরি পোশাক মালিক পক্ষ এ প্রস্তাব মানতে নারাজ। তাদের প্রস্তাবের বিপরীতে মালিক পক্ষ নিয়মিত ৫ শতাংশের সঙ্গে আরও অতিরিক্ত ১ শতাংশসহ মোট ৬ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির কথা বলেছেন। তবে প্রস্তাব মানতে নারাজ শ্রমিক প্রতিনিধিরা।

তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্মূল্যায়ন ও বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি সংক্রান্ত শ্রম মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির তৃতীয় বৈঠকে রোববার মালিকপক্ষ এই প্রস্তাব দেয়। সচিবালয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অতিরিক্ত সচিব সবুর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের ছয়জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন-নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমএই) সহায়ক কমিটির সদস্য এ এন এম সাইফুদ্দিন, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) মহাসচিব ফারুক আহাম্মদ, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুব বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি কবির আহম্মেদ।

সূত্র জানায়, আগে থেকেই বছরে মজুরি ৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে। এর সঙ্গে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা অতিরিক্ত ১ শতাংশসহ মোট ৬ শতাংশ বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির লিখিত প্রস্তাব দেন। তবে শ্রমিক প্রতিনিধিরা মালিকদের ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠক আর এগোয়নি। এ বিষয়ে আগামী ২৮ নভেম্বর কমিটির চতুর্থ বৈঠকে আলোচনা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিকদের টানা বিক্ষোভ শুরু হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত সেপ্টেম্বরে ১৮টি বিষয়ে তৈরি পোশাকশিল্প মালিক ও শ্রমিকনেতারা সমঝোতায় পৌঁছান। সমঝোতা অনুযায়ী, মজুরি পুনর্মূল্যায়নে ছয় মাস এবং বছরের নভেম্বরের মধ্যে বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারকে প্রতিবেদন দিতে হবে।

গত ৪ নভেম্বর কমিটির দ্বিতীয় সভায় শ্রমিক প্রতিনিধিরা ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত বার্ষিক মজুরি ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন। এতে শ্রমিক প্রতিনিধিরা যুক্তি দেন, ঐতিহাসিকভাবে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি সাধারণ জীবনযাপনের প্রয়োজনের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জীবনধারণের ন্যূনতম মান বজায় রাখার অনুপযুক্ত মজুরি হওয়ায় বৈষম্য বাড়ছে। সাম্প্রতিক অস্থিরতার পেছনেও অপর্যাপ্ত মজুরির বিষয়টি ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন তারা।

মালিক পক্ষ থেকে বলা হয়, গত ২ বছর আগেও মূল্যস্ফীতি ৫ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে ছিল। সরকার আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার কথা বলছে। সেটি বিবেচনায় নিয়ে ৬ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের প্রস্তাব করা হয়েছে। যদি মূল্যস্ফীতি না কমে তাহলে পরবর্তী সময়ে যখন ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠন করা হবে, তখন সেটি আমলে নেওয়ার সুযোগ থাকবে। শ্রমিক প্রতিনিধিরা বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে ৯ থেকে ১০ শতাংশ। এ পরিপ্রেক্ষিতে ৬ শতাংশ মজুরি বাড়ালে তাদের কোনো উপকার হবে না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম