জাজিরায় নদী রক্ষা বাঁধে ধস
হুমকিতে পদ্মা সেতু, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
কেএম রায়হান কবীর, শরীয়তপুর
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে নদীরক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এতে পদ্মা সেতু এবং আশপাশের এলাকার বাড়িঘর, দোকানপাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে।
ইতোমধ্যে একটি মসজিদ নদীতে ধসে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবি, রাতের আঁধারে নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এমন ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে প্রায় ৩ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করে সেতু কর্তৃপক্ষ।
এতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা। ৩ নভেম্বর থেকে বাঁধের পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকার ধস শুরু হয়। ১৭ নভেম্বর বিকাল পর্যন্ত বাঁধটির প্রায় ১০০ মিটার নদীতে ধসে পড়ে। এতে কংক্রিটের সিসি ব্লকগুলো তলিয়ে গেছে। এছাড়াও আশপাশে ফাটল দেখা দিয়েছে। নদীর ওপারে পাইনপাড়া আহম্মদ মাঝি কান্দি এলাকায় মফিজুল উলুম জামে মসজিদ নদীতে ভেঙে পড়েছে।
এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। তবে ভাঙন রোধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। শিগগিরই ধসে যাওয়া বাঁধ সংস্কার করা না হলে হুমকির মুখে পড়বে নদীপাড়ের পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় বাসিন্দা আপন হোসেন বলেন, বাঁধটি নির্মাণের পর এলাকার মানুষ ভেবেছিল নদীভাঙন থেকে মুক্তি পেয়েছে। তবে একটি চক্র রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করায় বাঁধে ধস নেমেছে। অতি দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পুরো এলাকা নদীতে বিলীন হবে। আমরা চাই বাঁধটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।
আমেনা বেগম বলেন, অনেক আগে এ এলাকায় ভাঙন ছিল। তাই আমরা এখান থেকে সরে গিয়েছিলাম। পরে বাঁধ নির্মাণ হলে ফিরে আসি। এবার বাঁধে ধস নেমেছে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে আবার চলে যেতে হবে।
চুন্নু মাঝি নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, বাঁধ নির্মাণের পর আমরা সবাই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছি। এখন যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে মনে হয় আর থাকা হবে না।
পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন খান বলেন, হঠাৎ করে বেড়িবাঁধের একটি অংশ ভেঙে গেছে। তৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা আতঙ্কিত। ফলে পদ্মা সেতু এবং ওসিমদ্দি কান্দি, পাইনপাড়া ও আলম খার কান্দির বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন বণিক বলেন, ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।