সংসার ভাঙল সুরসম্রাট এ আর রহমানের
আনন্দনগর প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
অস্কারজয়ী ভারতীয় সংগীতশিল্পী এ আর রহমান তার সংগীতের জাদুতে মুগ্ধ করেছেন বিশ্ববাসীকে। সংগীতের সুরে সবাইকে ভাসালেও এবার তার নিজের সংসারের সুর যেন বদলে গেল। ১৯৯৫ সালে সায়রা বানুকে বিয়ে করে ঘরে তোলেন এ শিল্পী। সংসার জীবনের ২৯ বছরে এসে বিচ্ছেদের মতো একটি সিদ্ধান্ত নিলেন এ দম্পতি। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে রহমানের স্ত্রী সায়রা বানুর আইনজীবী বন্দনা শাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিবৃতিতে সায়রা বানু বলেন, ‘তাদের সম্পর্কে বেশকিছু সমস্যার কারণে এ রকম একটি সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে দীর্ঘদিনের এ সম্পর্ক ছিন্ন করাও তাদের পক্ষে বেশ কঠিন ছিল।’ বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘দুজনের ইচ্ছেতেই এমন সিদ্ধান্ত নেন এ দম্পতি। তবে একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা-সম্মান রেখেই সম্পর্কের ইতি টানেন। দীর্ঘদিনের সংসার জীবনের মানসিক টানাপোড়েনের পরই আলাদা হওয়ার কথা ভাবেন তারা। তাদের মধ্যে গভীর ভালোবাসা থাকলেও কিছু তিক্ততা দুজনের দূরত্ব বাড়িয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে এ. আর. রহমান বলেন, ‘স্ত্রী সায়রা বানুর সঙ্গে তার মতপার্থক্য রয়েছে। এছাড়া স্ত্রী তার পছন্দের ছিলেন না। এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাকে বিয়ে করেছিলেন। কারণ সে সময় বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজে পাচ্ছিলেন না।’ এ দম্পতির রয়েছে দুই মেয়ে, এক ছেলে। তারা হলেন-খাতিজা রহমান, রহীমা রহমান, এ. আর. আমীন। বাবা-মায়ের এমন সিদ্ধান্তে রহমানপুত্র ও কন্যারা অনুরোধ জানিয়ে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে বলেন, ‘আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি যে, এই বিষয়টি গোপনীয়তা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখার জন্য। আমাদের বাবা-মার প্রতি আপনাদের এ সম্মান থাকবে বলেই আশা করছি। প্রার্থনা রাখবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ।’
এদিকে এ দম্পতিকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল আম্বানির ছোট ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে। তখনো তাদের দেখে ঘুণাক্ষরেও বোঝা যায়নি যে, তাদের মধ্যে এতটা মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের ৬ জানুয়ারি ভারতের মাদ্রাজে জন্মগ্রহণ করা এ আর রহমান জন্মসূত্রে ছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বী। তার পূর্ব নাম ছিল এ এস দিলীপ কুমার। বাবার নাম আর. কে. শেখর। ১৯৮৮ সালে ২০ বছর বয়সে তিনি ও তার পুরো পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। মায়ের ইচ্ছেতে ১৯৮৭ সালে সংগীত জগতে যাত্রা শুরু করেন এ শিল্পী। ১৯৯২ সালে ‘রোজা’ সিনেমার মধ্য দিয়ে সিনেমার গানে পেশাগত শিল্পী হিসাবে কাজ শুরু করেন। তিনি একজন বিখ্যাত সুরকার, সংগীত পরিচালক, প্রযোজকও। তিনি ভারতীয়, চীনা ও ইংরেজি সিনেমায়ও সংগীত পরিচালনা করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ‘স্লামডগ মিলিয়নিয়ার’ সিনেমায় সংগীতের জন্য অস্কার পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া তিনি মারিশাস ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড, মালয়েশিয়ান অ্যাওয়ার্ড, চারবার ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড (ভারত), তামিলনাড়ু স্টেট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড, ১৩টি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড, বারোটি দক্ষিণ ভারতীয় ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।