ছাত্রলীগের নামে অপকর্ম
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ১০ ইন্টার্ন চিকিৎসকের শাস্তি
কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ১০ ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে আজীবনের জন্য মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন এবং হয়রানিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থক।
শাস্তি পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন-২৫তম ব্যাচের হৃদয় রঞ্জন নাথ ও আনোয়ার হোসেন, ২৭ ব্যাচের শহিদুল ইসলাম, জয় সরকার ও সামিউল হক, ২৮ ব্যাচের শাইখ আবেদিন, তালুকদার মো. ফারহান ও তাহসিনুল হক, ৩০ ব্যাচের আফ্রিদি ইসলাম এবং ৩১ ব্যাচের ইয়াসির জোনায়েদ।
সূত্র জানায়, হৃদয় রঞ্জন নাথকে ক্যাম্পাসে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সামিউল হকের দুই বছরের জন্য ইন্টার্ন প্রশিক্ষণ স্থগিত করা হয়েছে। জয় সরকার এবং শাইখ আবেদিনেরও দুই বছরের জন্য ইন্টার্ন প্রশিক্ষণ স্থগিত করা হয়েছে। তালুকদার মো. ফারহান ও তাহসিনুল হকের ২৪ মাস পেশাগত পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখাসহ দুই বছরের জন্য হোস্টেলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের পরবর্তী আচরণ তদারক করা হবে। এক বছরের জন্য ইন্টার্ন প্রশিক্ষণ স্থগিত হয়েছে আনোয়ার হোসেন এবং শহিদুল ইসলামের। আফ্রিদি ইসলামকে ১২ মাস পেশাগত পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখাসহ দুই বছর হোস্টেলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার পরবর্তী আচরণ তদারক করা হবে। এ ছাড়া ইয়াসির জোনায়েদকে ছয় মাসের জন্য পেশাগত পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত ও কলেজের হোস্টেলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বুধবার রাতে কলেজের অধ্যক্ষ মির্জ্জা মুহাম্মদ তাইয়েবুল ইসলাম বলেন, সোমবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ১০ জনের শাস্তির সিদ্ধান্ত হয়। তারা ছাত্রলীগের ব্যানারে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন এবং হয়রানি করেছে। পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে আসায় তাদের বিরুদ্ধে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টায় মেডিকেল কলেজ গেটে হৃদয় রঞ্জন নাথের নেতৃত্বে ২৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুজাহিদ ত্বহাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। আরেক শিক্ষার্থী আবদুল মান্নানকেও হেনস্তা করা হয়। পরে তাদের শিবিরের নেতাকর্মী বলে পুলিশে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। ৩ মার্চ আবদুল মান্নানের মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে হাতবোমা দিয়ে মান্নানকে বিস্ফোরক মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। মোটরসাইকেল ফেরত দেওয়ার জন্য তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাও দাবি করা হয়। এ ছাড়া ৯ মার্চ কলেজ ক্যাম্পাসে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।