হুইলচেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানে তারেক রহমান
প্রতিষ্ঠানের নামকরণ হবে শহিদদের নামে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন, নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন এ রকম প্রতিটি মানুষের নামে বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি হবে। এ মানুষগুলোর নাম যাতে হারিয়ে না যায়, সেজন্য রাষ্ট্রীয় যেসব প্রতিষ্ঠান-সেটি থানা, জেলা বা বিভাগীয় পর্যায়ে হোক, ঢাকা শহরে হোক এই শহিদদের নামে নামকরণ করার প্রস্তাব আমাদের আছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ আয়োজনে ’২৪-র গণ-আন্দোলনে পঙ্গুত্ববরণকারী ছাত্র-জনতা ও দুস্থদের মাঝে হুইলচেয়ার বিতরণকালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচারমুক্ত বর্তমান পরিস্থিতি তৈরি করতে বিগত ১৭ বছরে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য বিএনপির বহু নেতাকর্মী আত্মাহুতি দিয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে জুলাই-আগস্ট মাসেও বহু মানুষ শহিদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন। তাদের পাশে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া সবার দায়িত্ব। বিএনপি সরকারে গেলে যেসব পরিবারে এ ধরনের পঙ্গু মানুষ আছে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমরা একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য হিসেবে, দেশের জন্য ও মানুষের জন্য বিভিন্ন পলিসির মাধ্যমে ভালো কিছু করার চেষ্টা করি। কিন্তু একজন মানুষ হিসাবে আমাদের দায়িত্ব, যতটুকু অবস্থান আছে, যতটুকু আমরা সক্ষম, তার ভিত্তিতে মানুষের বিপদে-আপদে সাহায্য করা।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের এই চেষ্টাটি শুধু এখানে থেমে থাকলেই হবে না। আজকে হুইলচেয়ার দিচ্ছি, কারণ কোনো কারণে তারা পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। বিজ্ঞান বর্তমানে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই যে, আজ না হলেও কাল এমন কোনো চিকিৎসা তাদের দিতে সক্ষম হব, সেই চিকিৎসার সুবিধার কারণে তারা হয়তো আবার আগের মতো হাঁটতে চলতে ফিরতে পারবেন, নিজের পায়ে হুইলচেয়ারের প্রয়োজন হবে না।
তারেক রহমান আরও বলেন, সারা বাংলাদেশে বহু মানুষ আত্মত্যাগ করেছেন। কতজনকে আমরা সেই চিকিৎসার সুবিধা দিতে পারব, সেটি বলতে পারব না। তবে বসে থাকলে ঠিক হবে না। যে কয়জনকে আমরা পারি এগিয়ে আসা উচিত। আমি আহ্বান করব সমাজের প্রতিটি মানুষকে, যাদের যতটুকুই সামর্থ্য আছে সেই সাধ্য অনুযায়ী তারা এগিয়ে আসবেন।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলন বাদেও বহু মানুষ আছেন যারা বিভিন্নভাবে জন্মগত কারণেই হোক বা অসুখেই হোক পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়েছে। বাংলাদেশের সামাজিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে যদি পরিবারের কোনো মানুষ পঙ্গু হয়ে থাকে, সে পরিবারের কাছে একটি বোঝার মতো হয়ে থাকে। সেই পরিবারের কষ্ট অনেক বেড়ে যায়। বিএনপি আগামীতে সরকার গঠনে সক্ষম হলে সরকারের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে আমাদের একটা উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য থাকবে তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। যাতে করে সে পঙ্গু মানুষগুলো নিজেরা যতটুকু সম্ভব স্বাবলম্বী হতে পারে।
তারেক রহমানের বক্তব্য শেষে ১০ পঙ্গু ব্যক্তির মাঝে অত্যাধুনিক মানের হুইলচেয়ার বিতরণ করা হয়। আগামীতে সারা দেশে আরও হুইলচেয়ার বিতরণ করা হবে বলেও জানানো হয়।
আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ উদ্দিন বকুল, মাহমুদুর রহমান সুমন, ড. এমএ মুহিত প্রমুখ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের লড়াই। বাকস্বাধীনতার জন্য লড়াই। যাদের বয়স আজ ২০-২২ বছর, তারা ভোট দিতে পারেনি। তারা ভোট দেওয়া জানে না। তারা আর কত সময় অপেক্ষা করবে? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে গণতন্ত্রের প্রতীক, গণতন্ত্রের মডেল। তা না করে এই যে প্রলম্বিত করা, আমার মনে হচ্ছে কোথাও কোনো জটিলতা হচ্ছে। গণতন্ত্র চর্চা ও গণতন্ত্রের বিকাশে কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে। তা না হলে তিনি (এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা) কেন এত লম্বা সময়ের কথা বলছেন। এ সরকারের মধ্যেই কোথাও কোনো ঘাপলা আছে। এ সরকারের কারও মধ্যে কোনো মাস্টারপ্ল্যান আছে কিনা এটা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।