উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
জুলাই-আগস্টের শহিদদের নামে স্টেডিয়াম হবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহিদদের নামে উপজেলা পর্যায়ে ২২০টির বেশি স্টেডিয়াম স্থাপনে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ২০২৫ সালের পাঠ্যবইতে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান নিয়ে একটি অধ্যায় সংযোজন করা হচ্ছে। শনিবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য নির্মিত শহিদ ফারহান ফাইয়াজ খেলার মাঠের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, প্রত্যেকটা স্টেডিয়ামের নামই সেই উপজেলায় যেসব শহিদ রয়েছেন, তাদের নামে হবে। আমরা এই উদ্যোগটা নিচ্ছি, কেননা আমরা চাই যারা জীবন দিয়ে এক সীমাহীন ফ্যাসিবাদ থেকে আমাদের মুক্ত করেছে, যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি, দেশ পুনর্গঠনের স্বপ্ন দেখছি, রাষ্ট্র সংস্কারে সবাই অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছি তাদের যেন আমরা কখনো ভুলে না যাই, বাংলাদেশ কখনও ভুলে না যায়। সেটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা এই ক্ষুদ্র প্রয়াস নিচ্ছি। কুষ্টিয়ার জেলা স্টেডিয়ামের নাম আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম, টাঙ্গাইল জেলা স্টেডিয়ামের নাম জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে টাঙ্গাইলে পুলিশের গুলিতে নিহত শহিদ মারুফের নামে করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ১৮ জুলাই ধানমন্ডিতে গুলিতে নিহত হন রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। ফাইয়াজের নামে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য নতুন করে নির্মিত এ খেলার মাঠের উদ্বোধন করা হলো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব ড. মো. আনোয়ার উল্লাহ। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার ছিলেন শহিদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া ও মা ফারহানা দিবা। অনুষ্ঠানে ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া ও বোন সায়মা ইসলাম ফারিন জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান ও শহিদদের বীরত্ব নিয়ে পাঠ্যবইতে একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আমার জানামতে আমাদের ২০২৫-এর যে পাঠ্যপুস্তক আসছে, যদিও খুব সময় স্বল্পতার কারণে অন্তর্ভুক্তিটা হয়তো এতটা দৃশ্যমান করা সম্ভব হবে না। কিন্তু সেখানে একটা চ্যাপ্টার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে থাকবে। যেখানে আমাদের শহিদদের স্মৃতিকথা লেখা থাকবে। আমাদের পরিকল্পনা আছে, পরবর্তী বছরের যে পাঠ্যপুস্তক, সেখানে যেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম শিখতে পারে, পড়তে পারে। সেজন্য যথাযথভাবে স্টোরিগুলোকে, স্মৃতিগুলোকে আমরা তুলে ধরতে পারি, সে প্রচেষ্টা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের রয়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের সচিব ড. মো. আনোয়ার উল্লাহ বলেন, যে কাজটি আমরা ১২ বছর আগে শুরু করার চেষ্টা করেছিলাম, সেই দিনটি আমরা আজকে পেয়েছি, এই মাঠটি আমরা পেয়েছি। আমি এসেই পিডি মহোদয়কে বলেছিলাম, কোনো অবস্থাতেই ১৫ তারিখের পরে কাজ না করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার উপস্থিতিতে ১৬ তারিখ মাঠটি উদ্বোধন করতে হবে। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নটি আজকে বাস্তবায়িত হয়েছে। লুই আই কানের এই জায়গাটায় যখন কাজ শুরু হয়েছিল তখন প্রচুর বাধা এসেছিল। আমি নিজেও এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিলাম, না এখানে করতেই হবে।