নেতাকর্মীদের খোলা মাঠে রেখে শেখ হাসিনা ভয়ে হেলিকপ্টারে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। শুক্রবার রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মির্জা গোলাম হাফিজ ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত মাসব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বত্তৃদ্ধতায় এই মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, আমরা দেখেছি বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ কিভাবে বিএনপি-জামায়াতসহ অন্য দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে-গুম, খুন ও নির্যাতন করেছে। ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা প্রশাসনকে অপব্যবহার করে যে কাজগুলো করেছেন এর ফল কি হতে পারে তা ১৬ বছর পর সচক্ষে দেখেছেন। যে নেতাকর্মীরা তার ওপর এত ভরসা করতেন তাদের খোলা মাঠে রেখে ভয়ে হেলিকপ্টারে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা আছে। এই শিক্ষাটা আমাদের নিতে হবে। এই একই কাজ যেন এখন থেকে আমরা না করি। যারা ভালো, ভালো কাজ করেছেন, কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তারা যে দলেরই হোক তাদের সঙ্গে যেন নতুন করে অন্যায় না হয়। আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা যদি একই কাজ করেন তাহলে এক দলের সঙ্গে আরেক দলের কামড়াকামড়ি যাবে না। সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা কোনোদিন চালু হবে না। হাসিনার কোনো দোসর যদি বিগত সময়ে অন্যায়, অত্যাচার ও অপকর্ম করে থাকেন তাদের আইনগতভাবে যে শাস্তি হওয়া দরকার সেটিই যেন হয়। একইভাবে কোনো নির্দোষ মানুষ কোনোভাবে এখন যেন কারও দ্বারা অন্যায়ের শিকার না হন। সৃষ্টিকর্তা ও প্রকৃতির একটি ন্যাচারাল রিভেঞ্জ আছে। যেটা শেখ হাসিনা এখন পাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি আমাদের পারস্পরিক যে শ্রদ্ধাবোধ সেটি থাকা উচিত। কেউ একজন অন্য দল করে বলে সে আমার শত্রু এই মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ভালো কাজ করলে সে যে দলেরই হোক তার সুনাম করব। কারও কাজ খারাপ হলে তার সমালোচনা করব সে যে দলেরই হোক। উত্তরবঙ্গের মানুষ ভালো, মন-মানসিকতা ভালো, সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে সামান্য কিছুতেই আমাদের মধ্যে প্রচুর মনোমালিন্য, বিভাজন। এই জিনিসটা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।

সবশেষে তিনি বলেন, আমাদের এই মেলা চিত্তবিনোদনের একটা জায়গা হোক। কিন্তু মেলার কোনো উপকরণ যেন তরুণ সমাজকে বিপথে না নেয়, বিপথে নিতে প্ররোচিত না করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও মেলা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।