Logo
Logo
×

শেষ পাতা

কাকরাইল মসজিদ নিয়ে সাদপন্থিরা

দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্র কি না দেখতে হবে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্র কি না দেখতে হবে

পতিত ফ্যাসিস্টদের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের মধ্যে ধর্মীয় দাঙ্গা লাগানোর কোনো ষড়যন্ত্র চলছে কিনা তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে মাওলানা সাদপন্থি আলেমরা। কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান নিয়ে ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশের হুঁশিয়ারির পর বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তারা।

‘দাওয়াত ও তাবলিগের ওলামায়ে কেরাম ও সাধারণ সাথীবৃন্দ’র ব্যানারে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতা করেন, কাকরাইল মসজিদের ইমাম মুফতি আজীমুদ্দীন। উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা জিয়া বিন কাসেম, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক কাসেমী, মুফতি মু’আজ বিন নূর, মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ, জাতীয় ইত্তেহাদুল উলামা ও আইম্মা পরিষদের সভাপতি পির মুফতি শফিউল্লাহ মক্কী, মুফতি আরীফুর রহমান আলীফ, কাকরাইলের মুকিম রেজা আরিফ, ঢাকা জেলার তাবলিগের জিম্মাদার আতাউর রহমান, তৌহিদুল হক সোহেল, ড. মো. রেজাউল করিম, মিডিয়া সমন্বয়ক মো. সায়েম প্রমুখ। তারা জানান, ৭ বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদে জুবায়েরপন্থিরা ৪ সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যদিও বিগত সরকারের এমন বৈষম্যপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আসছিল সাদপন্থিরা। এখন মসজিদ দখল করে ১৫ নভেম্বর থেকে অবস্থান নিতে চান তারা।

সাদপন্থি আলেমরা আরও বলেন, অপরদিকে কাকরাইল মসজিদের একটি অংশে এমনিতেই জুবায়েরপন্থিরা সারা বছর মাদরাসার নামে আলাদা অবস্থান নিয়ে থাকেন। কিন্তু হেফাজতে ইসলামের আলেমদের সাম্প্রতিক ঘোষণার প্রেক্ষাপটে জুবায়েরপন্থিরা সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাকরাইল মসজিদ স্থায়ীভাবে দখলে নিতে চাইছেন। এতে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের শঙ্কা করছি আমরা। আমরা মনে করি, সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে উভয়পক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসন দরকার। আলেম-ওলামারা এ বিষয়ে পূর্বের মতো কাকরাইল মসজিদসহ বিশ্ব ইজতেমা ও সারা দেশে আলাদা আলাদা কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংঘাত হবে না।

সাদপন্থি আলেমরা বলেন, তাবলিগের সাদ অনুসারীরাও কয়েক লাখ লোকের জমায়েত করতে পারে। এমতাবস্থায় সরকার যদি শক্ত ভূমিকায় অবতীর্ণ না হয়, তাতে দুপক্ষে ব্যাপক সংঘাতের পাশাপাশি দেশব্যাপী উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়বে। সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করা হয়, মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে যারা উপস্থিত ছিলেন তারা সবাই আওয়ামী সরকারের দোসর এবং ধর্মীয় সেক্টরে আওয়ামী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। এরাই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আঁতাত করে বিগত ৭ বছর তাবলিগের বিশ্ব আমির মাওলানা মোহাম্মদ সা’দ কান্ধলভীকে বাংলাদেশে আসতে দেয়নি। 

বিশ্ব ইজতেমার বিষয়ে সমঝোতার দাবি এক পক্ষের, অন্যপক্ষের না : টঙ্গী শিল্পাঞ্চল (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে সরকারের মধ্যস্থতায় সমাঝোতা হয়েছে বলে বিবৃতি দিয়েছে ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ। কিন্তু সমঝোতা হয়নি বলে জানিয়েছে তাবলিগের সাদপন্থিরা। বুধবার সন্ধ্যায় শুরায়ী নেজামের (জুবায়েরপন্থি) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান যুগান্তরকে বিবৃতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ১২ নভেম্বর বর্তমান সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে তাবলিগের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ফলে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের বিষয়ে আগের তরতিব বা নিয়ম মেনে নিয়ে বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করার ব্যাপারে সবাই একমত পোষণ করেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দিল্লির মাওলানা সাদ বাংলাদেশে আসবেন না মর্মে সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত জানানো হয় এবং শুরায়ী নেজামের বিশ্ব ইজতেমা ৩১ জানুয়ারি, ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। সবাইকে এ বিষয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন ওলামা-মাশায়েখের পক্ষে মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ। তবে সন্ধ্যায় সাদপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম যুগান্তরকে বলেন, আমরা আগের অবস্থানেই আছি। প্রথম পর্বেই ইজতেমা করব ইনশাআল্লাহ। এটা সম্পূর্ণ ওদের নিজস্ব বিবৃতি এবং অসত্য। এটা কোনো সরকারি বিবৃতি নয়। ইনশাআল্লাহ শুক্রবার আটটায় আমরা কাকরাইল মসজিদে প্রবেশ করব।

প্রসঙ্গত, আগামী বিশ্ব ইজতেমা দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপ ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় ধাপ ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম