ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, সব প্রকল্পকে রাজনৈতিক ও সিন্ডিকেট মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। কোনোভাবেই ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। তিনি বলেন, প্রকল্পের কাজের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজদের ব্যাপারেও কঠোর সরকার। এ নিয়ে নীতিমালা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যাম্পাসের মেগা প্রকল্পটি একনেক সভায় পাশ হয়েছে। তবে এটির বিষয়ে ছাত্র-শিক্ষকরা এখনো জানেন না। আমি নিজে উদ্যোগ নিয়ে একনেক সভায় প্রকল্প পাশ করিয়ে নিয়েছি। এখন পর্যন্ত সেটার কার্যবিবরণী জারি হয়নি। কেরানীগঞ্জের সম্পূর্ণ একটা নতুন ক্যাম্পাস তৈরি করা হবে। বাংলাদেশে এভাবে এত বড় একটা নতুন ক্যাম্পাস আগে কখনো তৈরি করা হয়নি। এছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হবে; যেখানে ছাত্রাবাস থাকবে, প্রশাসনিক ভবন থাকবে, স্কুল থাকবে, চিকিৎসা কেন্দ্র থাকবে-এরকম একটা প্ল্যান করার অনুমতি একনেক থেকে পাশ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এখন যে চলমান প্রকল্প আছে সেখানে কিছু জমি অধিগ্রহণ করা এবং জমিগুলো ঠিকঠাক করে কিছু প্রাথমিক কাজ করা। সেটা হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ফেজ। প্রথম ফেজটাও ওরা জানার আগে আমি নিজ উদ্যোগে, পরিকল্পনা কমিশনে পড়ে ছিল অনেকদিন ধরে। আমি সেটা পাশ করিয়ে দিয়েছিলাম। চলমান প্রকল্প নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, চলমান প্রকল্প নিয়ে আমি তাদের অভিযোগ বুঝতে পারি। এত বছর ধরে প্রকল্পটা কেন হচ্ছে না, ভূমি অধিগ্রহণ কেন হয়নি, তারা বলছে যে প্রকল্প পরিচালকের অনেক দুর্নীতি হয়েছে। আমি বলেছি তদন্ত করে দেখুক, কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে সেই প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নতুন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হোক।
তিনি বলেন, বুয়েটের মাধ্যমে তারা প্রথম প্রকল্পের পরিচালনা করছে। এটা এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তারা চাচ্ছে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তাদের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হোক। তাতেও কোনো সমস্যা নেই। এতে আমরা সহায়তা করব, কী করে তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া যায়।
উপদেষ্টা আরও বলেন, তাদের ছোটখাটো কিছু দাবি আছে সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সমাধান করা যেতে পারে। যেমন তারা চাচ্ছে এতদিন যত দুর্নীতি হয়েছে তার একটা হোয়াইট পেপার (শ্বেতপত্র)। আমি বললাম আমি কি তোমাদের জন্য পেপার তৈরি করব? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আছে, তারা তৈরি করবে।
পাঁচ দফা দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো-স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং ৭ দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে; শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখাসহ ঘোষণা করতে হবে যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হয়েছে; অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং পুরোনো ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল করতে হবে; সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষিত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।