১৬’র কম বয়সিদের জন্য ফেসবুক নিষিদ্ধের উদ্যোগ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
১৬ বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের উদ্যোগ নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার। শিশু-কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কেন্দ্রিক সহিংসতা ও আসক্তির হাত থেকে রক্ষা করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। খবর বিবিসির।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে সংসদে প্রস্তাবিত আইনটি উত্থাপন করা হবে। এই আইনের উদ্দেশ্য অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের ওপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ক্ষতি কমানো।’
এ আইনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের সন্তানদের ক্ষতি করছে। আমি হাজার হাজার বাবা-মা, দাদা-দাদি, চাচা-চাচির সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমার মতো অনলাইনে আমাদের শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমি অস্ট্রেলিয়ান বাবা-মা এবং পরিবারকে জানাতে চাই, সরকার আপনার পাশে রয়েছে।’
প্রস্তাবিত এ আইনে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী বা ব্যবহারকারীদের বাবা-মায়ের জন্য কোনো জরিমানার বিধান রাখা হয়নি। তবে, সামাজিক মাধ্যমের সংস্থাগুলো ১৬ বছরের কম বয়সিদের তাদের প্ল্যাটফর্মে ঢোকার সুযোগ দিলে অস্ট্রেলিয়া সরকার বড় অঙ্কের জরিমানা করতে পারবে।
এ বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার সংসদে শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা আইন উত্থাপন করা হয়েছিল। এটি ব্যাপক সমর্থনও পেয়েছিল। ফলে আইনটি পাশ হওয়া নিয়ে কোনো সংশয় নেই। প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ এই আইনকে বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন, এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম শিশুদের মনোবিকাশে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী মিশেল রোল্যান্ড বলেছেন, ‘কীভাবে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায়, সেই সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করা হয়েছে।’ তিনি ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, ফেসবুক, এক্স এবং ইউটিউবকে-সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম হিসাবে উল্লেখ করে বলেছেন এগুলো নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। সংসদে আইনটি পাশ হওয়ার ১২ মাস পরে কার্যকর হবে। আইন কার্যকর হওয়ার পর বিভিন্ন সময় তা পর্যালোচনা করা হবে।
সিবিএস নিউজ অস্ট্রেলিয়া সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে পাঁচটি সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থার কাছ থেকে বক্তব্য চেয়েছে। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এরই মধ্যে তাদের সেবায় কিশোর-কিশোরীদের জন্য বেশ কিছু ‘সেফটি টুল’ তৈরি করেছে। তবে বিশ্লেষকরা এই উদ্যোগ নিয়ে ইতোমধ্যেই সংশয় প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, অনলাইনে বয়সসীমা মেনে চলা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কারিগরি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এরই মধ্যে প্রস্তাবিত এ আইনের কঠোর সমালোচনা করেছে অস্ট্রেলিয়ায় শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা বৃহত্তম সংস্থা ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান চাইল্ড রাইটস টাস্কফোর্স’। প্রস্তাবিত আইনটিকে তারা ‘খুব ভোঁতা অস্ত্র’ বলেও উল্লেখ করেছে।