বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার
রোজানির্ভর ১১ পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন শিথিল
পণ্য আমদানিতে ডলারের জোগান বাড়ানো হয়েছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব এলসি খুলতে ব্যাংকগুলোর প্রতি নির্দেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আসন্ন পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে পণ্যের দামও যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে উদ্যোগী হয়েছে। এর মধ্যে রোজা নির্ভর ১১টি পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন শিথিল করা হয়েছে। পণ্যগুলো হচ্ছে চাল, গম, ডাল, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা এবং খেজুর। এসব পণ্য আমদানিতে এখন থেকে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে নগদ মার্জিন রাখতে হবে। এ নির্দেশনা আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে।
এ বিষয়ে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সূত্র জানায়, রোজা শুরুর আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক রোজানির্ভর পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন শিথিল করে। এবারও তাই করা হলো। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা কম মার্জিনে এলসি খুলতে পারবেন। ওইসব পণ্য ছাড়াও রোজার প্রয়োজনে ব্যবহৃত অন্য পণ্যের ক্ষেত্রেও কম মার্জিনে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এলসি খোলা যাবে।
রোজা শুরু হবে মার্চের শুরুর দিকে। এ হিসাবে এখনও পৌনে ৪ মাস বাকি রয়েছে রোজার। এর মধ্যে পণ্য আমদানি করে সেগুলো বাজারে সরবরাহ করা যাবে। একই সঙ্গে কাঁচামাল আমদানি করে সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করেও বাজারে ছাড়া যাবে।
সাধারণত এসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ মার্জিন নেওয়া হয়। অর্থাৎ ১০০ টাকার এলসি খুলতে ৩০ টাকা দিতে হয় উদ্যোক্তাকে। বাকি ৭০ টাকা ঋণ হিসাবে দেয় ব্যাংক। নতুন সার্কুলারের পরে এখন থেকে ব্যাংকগুলো গ্রাহক ভেদে সর্বনিম্ন ২ থেকে ৫ শতাংশ মার্জিন নিতে পারে। এতে উদ্যোক্তার নগদ টাকা লাগবে কম। ফলে বেশি এলসি খোলা যাবে। পণ্যের সরবরাহ বাড়বে। একই সঙ্গে মার্জিন কম নেওয়ার কারণে আমদানি খরচও কমবে।
সার্কুলারে বলা হয়, আসন্ন রোজা উপলক্ষ্যে ওইসব পণ্য আমদানি সহজ করতে ও বাজারে সরবরাহ বাড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে এসব পণ্য আমদানিতে অগ্রাধিকার দিয়ে এলসি খোলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে এসব পণ্য আমদানি বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে শুল্ক কমানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে চাল, ডাল, চিনি, পেঁয়াজের শুল্ক কমানো হয়েছে। ফলে এসব পণ্য আমদানিতে খরচ কমবে। এতেও বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। দাম কিছুটা হলেও কমবে।
বাজারে ডলার সংকট কিছুটা থাকলেও রোজানির্ভর পণ্য আমদানিতে ডলারের জোগান বাড়ানো হয়েছে। এসব পণ্য আমদানি করতে ব্যাংকগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডলারের জোগান দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকগুলো বা গ্রাহকরা ঋণ করেও এসব পণ্য আমদানি করতে পারবে।
আসন্ন রোজায় পণ্যের সরবরাহ ও যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন স্তর থেকে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভোগ্যপণ্যের কাঁচামাল আমদানি, নতুন এলসি খোলা, কারখানাগুলোতে উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থাও তদারকি করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট উৎস থেকে সরকার এসব তথ্য সংগ্রহ করে বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে। সরকারি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কাজ করছে।