ডেঙ্গুতে রেকর্ড ১৩৭০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যু ৬
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
দেশে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ অব্যাহত রয়েছে। এডিস মশাবাহিত রোগটিতে মৃত্যুর পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। হাসপাতালগুলোয় বাড়ছে রোগীর চাপ। এ ঊর্ধ্বমুখী ধারায় সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ১ হাজার ৩৭০ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ছয়জন, যা এ বছরে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী ভর্তির রেকর্ড। এর আগে ২৯ অক্টোবর ১ হাজার ৩১২ জন ভর্তি হয়েছিলেন। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভর্তি রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১২২, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪৪, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৬৮, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৫৯, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২৪৮, খুলনা বিভাগে ১৩৫, রাজশাহী বিভাগে ২৮, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৯ এবং রংপুর বিভাগে ২৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে একদিনে সারা দেশে ১ হাজার ৩০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬২ হাজার ৬১০ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৬৭ হাজার ১৩৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩২৬ জনের।
চলতি বছরে আক্রান্তদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী। এছাড়া এখন পর্যন্ত মৃত ৩২৬ জনের মধ্যে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ নারী এবং ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেতনতা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রতিবছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। ২০২৩ সালের জুন থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত বছর দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ১০ হাজার ৮ এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ২ লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।