বিফ্রিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
দ্রুতই আদানির বিল পরিশোধ করা হবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ভারতের আদানি গ্রুপের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের গতি বেড়েছে। সামনে আরও বাড়বে। বর্তমানে তাদের ৭শ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ বাকি আছে। দ্রুতই সেটি পরিশোধ করা হবে। রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পাচারের অর্থ বিদেশ থেকে ফেরত আনতে কাজ করছে সরকার। জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খতিয়ে দেখছে।
শফিকুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে রেমিট্যান্সের গতি বেড়েছে। ফলে এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে হাত না দিয়েই আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো করতে পারছি। ভারতের আদানি গ্রুপের বকেয়া পেমেন্ট দেওয়ার গতি বেড়েছে। সামনে আরও বাড়বে। সেই সক্ষমতা সরকারের আছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারতের আদানি গ্রুপ টাকা পায় এটা সত্য। তাদের পেমেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে গতি বাড়িয়েছি। আগের যে বিল বাকি আছে, সেটার জন্য মূলত পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী। তারা বিশাল ফাইল অব বেকলট রেখে গিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, আদানি গ্রুপকে গত মাসে আমরা ৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার পেমেন্ট করেছি। যেটা আগস্ট বা আগের মাসের চেয়ে দ্বিগুণ। আমাদের তরফ থেকে সর্বোচ্চ পেমেন্ট আরও দ্রুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, আমরা কারও দ্বারা পাওয়ার হোস্টেজ (জ্বালানিনির্ভরতা) হব না। নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হব। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বছরে ১৬ থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচারের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার টাকা পাচারের এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। সেই টাকা ফিরিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে। কত টাকা পাচার হয়েছে, তা বের করতে উচ্চ পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, সরকার কোনো ধরনের সহিংসতায় বিশ্বাস করে না। জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে হামলা এবং আগুন দেওয়ার যে ঘটনা ঘটেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খতিয়ে দেখবে। এ সময় জানানো হয়, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হবে কিনা সে ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোই সিদ্ধান্ত নেবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস উইং জানান, মুক্তিযুদ্ধে জাতীয় চার নেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার তাদের অবদান স্বীকার করে।
প্রসঙ্গত বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় করা ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তির আওতায় আদানি গ্রুপের কোম্পানি আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দিচ্ছে। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এই বিদ্যুৎ আসছে। তবে স্থানীয় বাজারের চেয়ে বেশি দামে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। চুক্তিটি করা হয় ২০১৭ সালে। চুক্তির ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ যথাযথভাবে রক্ষা করা হয়েছিল কি না তা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি বিল পরিশোধে বাংলাদেশকে আলটিমেটাম দিয়েছে আদানি।