ইউসিবি ব্যাংকে ছাঁটাই আতঙ্ক
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ছাঁটাই আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের শতাধিক কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ৪০ কর্মকর্তাকে ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ডেকে তাদের পদত্যাগ করতে বলেছেন। এ জন্য তাদের দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে। রোববার আরও কিছু কর্মকর্তাকে ডাকা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত সরকারের আমলে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ। ২০১৭ সালে পারটেক্স গ্রুপের পরিচালকদের ইউসিবি ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। তখন থেকেই ব্যাংকটিতে ব্যাপক লুটপাট শুরু হয়। এর সঙ্গে ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কতিপয় কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। নতুন গভর্নর দায়িত্বে এসে ইউসিবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করে দেয়।
ওই পর্ষদ এখন ব্যাংকটি পরিচালনা করছে। তারা ব্যাংকের কি পরিমাণ অর্থ লুটপাট হয়েছে সেটি জানতে এখন বিশেষ অডিট করছে। ওই অডিট শেষ হওয়ার আগেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর মধ্যে অর্ধেকে হচ্ছে বিভিন্ন শাখার ব্যবস্থাপক। তারা ব্যবস্থাপক থাকার সময়ে ব্যাংক থেকে অর্থ লুটপাট করা হয়েছে। অন্যরা প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে আছেন। এই ঘটনায় ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের মধ্যে ছাঁটাই আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ডেকে নিয়ে যাদের পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকের বাড়িই চট্টগ্রামে। এছাড়া অন্য এলাকার লোকজনও রয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত যাদের পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে তাদের অনেকেই কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নয় বলে জানা গেছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষও তাদের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়মের অভিযোগ আনতে পারেনি। তাদের অনেকের বাড়িই চট্টগ্রামে নয়। এদের অনেকেই জাভেদের নিয়ন্ত্রণে আসার আগেই ব্যাংকে চাকরিতে প্রবেশ করেছিলেন।
এ নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। পদত্যাগের নির্দেশ পাওয়া অনেক কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। অথচ পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। তারা পদত্যাগ না করে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে নালিশ করবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে ব্যাংক সূত্র জানায়, কয়েকটি অডিট কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এতে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের অনেককে ডেকে ব্যাংক থেকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। আরও কিছু কর্মকর্তাকে পদত্যাগ করতে বলা হবে। তাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে বলা হবে। পদত্যাগ না করলে চাকরিচ্যুত করা হবে। তখন ব্যাংকের সুযোগ-সুবিধা পেতে সমস্যা হবে বলে অনেকে পদত্যাগে রাজি হয়েছেন। এর আগে সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকে নিয়োগে অনিয়মের কারণে ৫৭৯ জন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তারা সবাই চট্টগ্রামের পটিয়া অঞ্চলের কর্মী ছিলেন।